ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন-বিরোধী বিক্ষোভ সামাল দিতে মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড নামিয়ে কোনও ‘আইনভঙ্গ’ করেননি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (California Unrest)। এই মর্মে সান ফ্রান্সিসকো আদালতের রায়কে খারিজ করে শুক্রবার রায় দিল ফেডেরাল আপিল আদালত। ট্রাম্পের পদক্ষেপকেই আইনসম্মত ও পরিস্থিতি-উপযোগী বলে মান্যতা দিল তিন বিচারপতির একটি প্যানেল।এই প্যানেলের দুই বিচারপতি ছিলেন ট্রাম্প মনোনীত, এবং একজন জো বাইডেন মনোনীত। তাঁরা একমতেই জানিয়েছেন—লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক ছিল, এবং সেখানে নিয়ন্ত্রণ আনতেই ন্যাশনাল গার্ড নামানো যৌক্তিক।
অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে উত্তাল ক্যালিফর্নিয়া (California Unrest)
ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসন নীতি ও আইসিই (ICE)-র ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে ক্যালিফর্নিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়(California Unrest)। লস অ্যাঞ্জেলেস-সহ বেশ কিছু জায়গায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান অভিবাসী ও মানবাধিকার কর্মীরা। গত সপ্তাহে সেই বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। শহরজুড়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের জেরে পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। এরপরই ট্রাম্প প্রশাসন ২,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নরের অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
সান ফ্রান্সিসকো বনাম আপিল আদালতের ভিন্ন মত (California Unrest)
সান ফ্রান্সিসকোর আদালতের মতে, লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত ছিল না যে সেখানে ফেডেরাল আইন প্রয়োগে ন্যাশনাল গার্ড নামাতে হবে(California Unrest)। তাঁদের মতে, এই আইন বিরল ও চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রয়োগযোগ্য। আদালতের রায় ছিল, ট্রাম্প অতি বলপ্রয়োগ করেছেন। তবে শুক্রবার ফেডেরাল আপিল আদালতের তিন বিচারপতির প্যানেল ৩৮ পাতার রায়ে জানায়, সান ফ্রান্সিসকোর রায় ছিল ‘বিচারগত ভুল’। পরিস্থিতির বিবেচনায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ ন্যায্য ছিল।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ও প্রশাসন? (California Unrest)
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই রায় ট্রাম্পের (Donald J. Trump) অভিবাসন নীতিকে আইনি স্বীকৃতি দেয়, এবং ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজ্যে হস্তক্ষেপের প্রক্রিয়াকেও সুগম করতে পারে। তবে ক্যালিফর্নিয়া প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পথ খোলা রেখেছে। তারা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বা আপিল আদালতেই রিভিউ চাইতে পারে। আপাতত অবশ্য তারা অপেক্ষা করছে ২৮ জুন মামলাটির ফের সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে ওঠার।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ ইঙ্গিত (California Unrest)
ট্রাম্প বারবার বলে এসেছেন, ‘‘আমেরিকা অনুপ্রবেশকারীদের জন্য নয়(California Unrest)।’’ প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রবেশ করার পর থেকেই তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসিই হানার জেরে শতাধিক অভিবাসী গ্রেফতার হন। এরই বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। তবে আপাতত আদালতের রায়ে তিনি সুবিধাজনক জায়গায়। রায় অনুযায়ী, অভিবাসন নীতি প্রয়োগে প্রয়োজনে আবারও সেনা নামাতে পারবেন তিনি।

কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের নতুন অধ্যায় (California Unrest)
এই মামলার রায় শুধু ট্রাম্পের নয়, বরং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, অভিবাসন আইন প্রয়োগ ও অসন্তোষ দমন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। প্রশ্ন উঠছে—রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের মধ্যে ভারসাম্য কোথায়? আপাতত সেই উত্তরের দিকেই নজর গোটা আমেরিকার।