ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: শিশুহত্যা, অপহরণ ও মানবিক সহায়তা বঞ্চনার অভিযোগে ফের আন্তর্জাতিক ধিক্কারের মুখে ইজরায়েল (Israel Hamas Conflict)। রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) বার্ষিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, শিশুদের উপর ‘অকল্পনীয়’ বর্বরতা চালানোর অভিযোগে ইজরায়েলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এই তালিকায় উঠে এল বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ।
রাষ্ট্রপুঞ্জ কী বলছে? (Israel Hamas Conflict)
শুক্রবার প্রকাশিত রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত সংক্রান্ত বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে মোট ৪১,৩৭০টি শিশু-সম্পর্কিত অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে তাদের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে(Israel Hamas Conflict)। এই অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে—
- শিশুদের হত্যা ও গুরুতর জখম
- অপহরণ ও আটক
- খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসার অভাব
- স্কুল, হাসপাতালের মতো স্থাপনাগুলিতে হামলা
- মানবিক সাহায্যে বাধা দেওয়া
রিপোর্টের ভাষায়, এই ঘটনাগুলি রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং যুদ্ধবিধি লঙ্ঘনের পরিষ্কার প্রমাণ বহন করে।
গাজায় শিশুহত্যার অভিযোগ (Israel Hamas Conflict)
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরে ইজরায়েল গাজা উপত্যকায় একের পর এক সামরিক অভিযান চালিয়েছে (Israel Hamas Conflict)। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, যার মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই শিশু। অনেক শিশুই নিহত হয়েছে বোমাবর্ষণে, আবার অনেকেই খাবার ও ওষুধের অভাবে প্রাণ হারিয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা দীর্ঘ তদন্তের পর এই রিপোর্ট পেশ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির তথ্য অনুসারে, ইজরায়েলি বাহিনী শুধু গাজায় নয়, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক অঞ্চলেও শিশুদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা পরিষদে আলোড়ন (Israel Hamas Conflict)
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানি শিশুদের উপর হামলার প্রমাণস্বরূপ কিছু ছবি পেশ করেন ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি (Israel Hamas Conflict)। এতে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতি। ইতিমধ্যেই এই রিপোর্টের ভিত্তিতে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন ইজরায়েলের বিরুদ্ধে War Crime মামলার দাবি তুলেছে। ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ ও ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর মতো সংস্থাগুলি এই তালিকাভুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে অভিহিত করেছে।

ইজরায়েলের প্রতিক্রিয়া (Israel Hamas Conflict)
রিপোর্ট প্রকাশের পরে ইজরায়েলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি(Israel Hamas Conflict)। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পূর্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জের এই ধরনের প্রতিবেদনকে “পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে আখ্যা দিয়েছেন। এই তালিকাভুক্তি কেবল ইজরায়েলের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির উপরই নয়, তার কূটনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই বার্তায় স্পষ্ট—শিশুদের রক্তক্ষয় আর সহ্য করা হবে না। পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে বিশ্ব সম্প্রদায় কতটা উদ্যোগী হয়, সেটাই এখন দেখার।