ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে এগিয়ে এল তিন প্রতিবেশী দেশ— চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ(Pakistan China Bangladesh Meeting)। বৃহস্পতিবার চিনের কুনমিং শহরে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এই তিন দেশের প্রতিনিধিরা পরস্পরের বোঝাপড়া আরও গভীর করার এবং যৌথ সহযোগিতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার করেছেন।
বৈঠকে কারা ছিলেন? (Pakistan China Bangladesh Meeting)
এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মুখোমুখি আলোচনায় অংশ নেন—
- চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী সান ওয়েডং
- বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী বিদেশ সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকি
- পাকিস্তানের অতিরিক্ত বিদেশ সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকি
এ ছাড়াও, পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আমনা বালোচ ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু (Pakistan China Bangladesh Meeting)
এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তিন দেশের পক্ষ থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকারের কথা উঠে এসেছে—
- বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করা
- অঞ্চলগত শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা
- যোগাযোগ, পরিকাঠামো এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি
- পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর জোর
পাকিস্তান তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা চিন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও ভূকৌশলগত অংশীদারিত্ব চাইছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকেও (Muhammad Yunus) দ্বিপাক্ষিকভাবে কাছে টানার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ।

আরও পড়ুন: Israel Hamas Conflict : শিশুহত্যা ও অত্যাচারের অভিযোগে ফের রাষ্ট্রপুঞ্জের কালো তালিকায় ইজরায়েল!
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য (Pakistan China Bangladesh Meeting)
এই বৈঠকের তাৎপর্য আরও বেড়ে যায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বদলের প্রেক্ষিতে। গত অগস্ট মাসে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তন এসেছে।
- মার্চে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস বেজিং সফরে গিয়ে চিনকে নানা খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
- পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যেকার পূর্বের কূটনৈতিক জড়তা ধীরে ধীরে কাটছে বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।

কৌশলগত বিশ্লেষণ (Pakistan China Bangladesh Meeting)
চিনের উদ্যোগে এই বৈঠক অনেকগুলি দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ—
- একদিকে এটি দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের প্রভাব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- অন্যদিকে, ভারতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে কৌশলগত চাপ তৈরি করতে পারে নয়াদিল্লির উপর।
- বাংলাদেশের অবস্থান কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে চিন ও পাকিস্তান উভয়ের কাছেই এটি আকর্ষণের কেন্দ্র।
এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক তাৎক্ষণিকভাবে কোনও চুক্তিতে না পৌঁছালেও, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কৌশলগত সংলাপের সূচনা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশল রাজনীতির মানচিত্রে এই বৈঠক একটি নতুন পর্বের সূচনা করতে চলেছে বলেই অভিমত।