ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে টানা (Landslide in North Bengal) বৃষ্টিপাত জনজীবনকে একপ্রকার স্থবির করে তুলেছে। গত এক সপ্তাহ ধরেই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও উত্তর দিনাজপুরসহ একাধিক জেলায় চলছে একটানা ভারী বর্ষণ। সোমবার রাত থেকেও বৃষ্টি অব্যাহত থেকেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এই বৃষ্টিপাত চলবে আরও কয়েকদিন, যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।
যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত (Landslide in North Bengal)
সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১৪৬ মিলিমিটার (Landslide in North Bengal) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে তো বটেই, সমতলেও এই বৃষ্টিপাত ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। রাতেই বিভিন্ন শহরের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল জমে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। অনেক এলাকায় গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষ কাজের জায়গায় পৌঁছতে সমস্যায় পড়েন।
ফুলেফেঁপে উঠেছে নদীগুলি (Landslide in North Bengal)
বৃষ্টির প্রভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে উত্তরের প্রধান (Landslide in North Bengal) নদীগুলি। মহানন্দা ও তিস্তা নদীর জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। বিশেষ করে তিস্তার জলস্রোত ঘিরে শঙ্কা বাড়ছে, কারণ সিকিমে ভারী বৃষ্টির প্রভাবে এই নদী আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেচ দফতর সার্বক্ষণিক নজর রাখছে নদীগুলির পরিস্থিতির উপর।
রাস্তায় একাধিক জায়গায় ধস
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। কালিম্পং ও সিকিমগামী এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথর ও বোল্ডারের কারণে রাস্তায় চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। শ্বেতীঝোরা, সেলফিদারা, বিরিকদারা, লিকুভিড় প্রভৃতি এলাকায় ধসের পরিমাণ বেশি। বিকল্প পথে সিকিম যেতে হলে সময় অনেক বেশি লাগছে, ফলে বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটক।

ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং উত্তর দিনাজপুরে ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে (৭-১১ সেন্টিমিটার)। যদিও মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দাপট কিছুটা কমতে পারে, তবে বৃহস্পতিবার থেকে ফের ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস মিলেছে। শুক্রবার থেকে বাকি জেলাগুলিতেও বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: Gold Rate Today: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি, মঙ্গলে সোনার দামে ফের পতন!
এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে নদীর পারবর্তী এলাকাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে যাঁরা নদীর খুব কাছে বসবাস করেন। পর্যটকদেরও আপাতত পাহাড়ের দিকে ভ্রমণ স্থগিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সকলের এখন একটাই প্রার্থনা-প্রকৃতির রোষ যেন আরও বড় বিপর্যয় ডেকে না আনে।