ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘বিবিকে এনে দাও। আমরা শান্তি স্থাপন করব।’ ১২ দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এভাবেই ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতির সম্পন্ন করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। অবশেষে বন্ধ হয়েছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ। মঙ্গলবার ভারতীয় সকাল সাড়ে ন’টা থেকে শুরু হয় যুদ্ধবিরতি। আর এই অসাধ্য সাধনের নেপথ্যে রয়েছেন ট্রাম্প। সূত্রের খবর, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নিজে ফোন করে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মধ্যস্থতা করেছে কাতারও।
অসাধ্য সাধন ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্তা জানান, রবিবার থেকেই যুদ্ধ বন্ধের কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়েছেন, ‘আমরা শান্তি ফেরাবই।’ ওই কর্তা আরও জানান, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, বিদেশসচিব মার্কো রুবিও এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ নিয়মিতভাবে কথা চালিয়ে গিয়েছেন ইরানের সঙ্গে। অন্যদিকে, যুদ্ধ থামাতে মরিয়া ট্রাম্প নিজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই কর্তা জানান, ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, ‘বিবিকে এনে দাও। আমরা শান্তি স্থাপন করব।’ উল্লেখ্য, ইজরায়েলের রাজনৈতিক মহলে ‘বিবি’ নামে পরিচিত নেতানিয়াহু।

কাতারের মধ্যস্থতা (Donald Trump)
সূত্রের খবর, কাতার ইরানের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করে যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করেছে(Donald Trump)।কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের আমিরের কাছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করেছিলেন।কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান বিন জসিম আল-থানি সোমবার ইরানের সম্মতি আদায় করেন, যা পরবর্তীতে ট্রাম্প বিশ্বকে জানান। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইজরায়েল এই শর্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে যে ইরান তাদের দেশে হামলা বন্ধ করবে। ইরান এই শর্তে সম্মত হয়েছে। সোমবার রাতেই ট্রাম্প এক বার্তায় বলেন, ইরানের ওপর সেই ‘নিখুঁত আঘাতই’ সবাইকে একত্রিত করেছে এবং চুক্তিটি সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে।
আরও পড়ুন-Israel: মার্কিন হামলার আগে ইউরেনিয়াম স্থানান্তর! ইরান নিয়ে সন্দিহান ইজরায়েল
ইজরায়েলের সম্মতি (Donald Trump)
অন্যদিকে, পরম বন্ধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মান রেখেছে ইজরায়েল(Donald Trump)। যুদ্ধবিরতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেল আভিভ। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সেনা অভিযানের লক্ষ্য অর্জন করায় এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ইজরায়েল যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।’ আরও বলা হয়েছে, ‘প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে (ইজরায়েলকে) সমর্থন এবং ইরানের পারমাণবিক হুমকির অবসান ঘটাতে সক্রিয় হওয়ায় ইজরায়েল রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানায়।’ উল্লেখ্য, সংঘর্ষবিরতি নিয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরেই নেতানিয়াহুর দফতর আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিল।

আরও পড়ুন-Iran: যুদ্ধবিরতি খারিজ করার পরেই ইউটার্ন ইরানের! ট্রাম্পের ঘোষণায় আশার আলো মধ্যপ্রাচ্যে
যুদ্ধবিরতি কার্যকর (Donald Trump)
১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি (Donald Trump)। নির্ধারিত সময় মেনে মঙ্গলবার সকালে সোশাল মিডিয়ায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্যত বাঁশি ফুঁকে ইরান ও ইজরায়েলের উদ্দেশে জানিয়ে দিলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এখন থেকে লাগু হল। অনুগ্রহ করে আর কেউ যুদ্ধবিরতি ভাঙবেন না।’ এর আগে ভোররাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে।সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, ‘আগামী ছ’ঘণ্টার মধ্যে ইরান-ইজরায়েল দু’পক্ষই সম্পূর্ণ সংঘর্ষবিরতিতে যাবে। এর শুরুটা করবে ইরান (প্রথম ১২ ঘণ্টা)। তাকে অনুসরণ করবে ইজরায়েল (পরের ১২ ঘণ্টা)। একপক্ষের সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করলে অপর পক্ষও শান্তি বজায় রাখবে। ২৪ ঘণ্টা পর বারো দিন ব্যাপী যুদ্ধের ইতি।’
