ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের তিনটি মূল পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি(US Strike In Iran)। তবে তা পুরোপুরি থেমে যায়নি—এমনটাই জানাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির একটি গোপন প্রাথমিক রিপোর্ট। এই রিপোর্টের তথ্য সামনে এনেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইম্স।
ইরানের পরমাণু পরিকাঠামোয় (US Strike In Iran)
হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের ফোরডো, নাতান্জ এবং ইসফাহান—এই তিন পরমাণুকেন্দ্র(US Strike In Iran)। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আমেরিকার বি-২ বোম্বার এবং জিবিইউ-৫৭ ‘মাদার অফ অল বাঙ্কার বাস্টার’-এর সাহায্যে এই হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু রিপোর্ট বলছে, এই কেন্দ্রে মাটির নিচে থাকা পরিকাঠামোর উপর মারাত্মক ক্ষতি হয়নি। দুটি কেন্দ্রে প্রবেশপথ ধ্বংস হলেও ভূগর্ভস্থ ভবনগুলি কার্যত অক্ষত রয়ে গিয়েছে।
গোয়েন্দা মূল্যায়নে দাবি করা হয়েছে, ইরান যদি হামলার আগে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা শুরু করত, তবে তিন মাসের মধ্যে তা সম্ভব হত। কিন্তু মার্কিন হামলার পর সেই সময়সীমা বড়জোর ছ’মাস পর্যন্ত বাড়ানো গিয়েছে। ফলে এই আঘাত ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সাময়িক ভাবে থামিয়ে রাখতে পেরেছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ভাবে নিষ্ক্রিয় করতে পারেনি(US Strike In Iran)।
ইরান পরমাণু পরিকাঠামো সরিয়ে ফেলেছে (US Strike In Iran)
রিপোর্টে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে— আমেরিকার গোয়েন্দাদের সন্দেহ, হামলার ঠিক আগে ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের একটা বড় অংশ গোপন জায়গায় সরিয়ে ফেলেছিল(US Strike In Iran)। এর ফলে হামলায় ইরানের পারমাণবিক দ্রব্যের খুব সামান্য অংশই ধ্বংস হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান আগেভাগেই আন্দাজ করেছিল যে আমেরিকা তাদের পরমাণুকেন্দ্রকে নিশানা করতে পারে।

রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তিনটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাতান্জ কেন্দ্র(US Strike In Iran)। তবে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি, ইরান ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রগুলিকে পুনরায় সচল করার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে কি না। ইজরায়েলি গোয়েন্দা সূত্রে সন্দেহ করা হচ্ছে, বড় কেন্দ্রগুলির বাইরেও ইরান কিছু ছোট, গোপন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে— যা হামলার বাইরে থেকে গিয়েছে। মূল কেন্দ্রগুলি ধ্বংস হলেও যাতে সমান্তরাল ভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই এগুলির নির্মাণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক মূল্যায়ন (US Strike In Iran)
প্রসঙ্গত, এই গোপন পাঁচ পাতার রিপোর্টটি এখনও পর্যন্ত একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন মাত্র(US Strike In Iran)। মার্কিন গোয়েন্দারা জানিয়েছে, স্যাটেলাইট ছবি, সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স এবং অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে আরও পর্যালোচনা করা হবে। তবে ট্রাম্প (Donald J. Trump) প্রশাসন আগেই জানিয়েছিল—“সব পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে”। ফলে প্রেসিডেন্টের দাবির সঙ্গে এই রিপোর্টের বাস্তব চিত্রের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধবিরতিতে ময়দানে কাতার! সংঘর্ষ থামলেও শান্তি এখনও অনিশ্চিত
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে— যদি ইরানের কর্মসূচি সাময়িক ধাক্কা খেয়ে ফের সচল হয়ে যায়, তবে কি এই হামলার কৌশলগত সাফল্য নিয়ে পুনর্বিচার করা প্রয়োজন? আমেরিকার পরবর্তী কূটনৈতিক অবস্থান ও গোয়েন্দা নজরদারি কীভাবে ইরানের পারমাণবিক ভবিষ্যৎ রুখে দিতে পারে, সেটাই এখন দেখার।