ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে সমাজতন্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া উচিত।’ এমনই মন্তব্য করে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে(RSS)। তাঁর মতে, জরুরি অবস্থার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি যোগ করেছিল। তাই এখন ওই দুই শব্দ বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
আরএসএস নেতার সওয়াল (RSS)
নয়া দিল্লিতে জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে আরএসএস নেতা বলেন, ‘জরুরি অবস্থার সময়, সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি যোগ করা হয়েছিল(RSS)। যা সংবিধানের মূল প্রস্তাবনার অংশ ছিল না।পরে এই শব্দগুলি বাদ দেওয়া হয়নি। এগুলি থাকা উচিত কিনা, তা নিয়ে হওয়া দরকার। ডঃ বিআর আম্বেদকরের সংবিধানে এই দুটি শব্দ ছিল না। জরুরি অবস্থার সময়, দেশে কোনও কার্যকর সংসদ ছিল না, কোনও অধিকার ছিল না, কোনও বিচার বিভাগ ছিল না, তবুও এই দুটি শব্দ যুক্ত করা হয়েছিল।জরুরি অবস্থার সময় কংগ্রেস গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল।’

কংগ্রেসকে নিশানা আরএসএস-র (RSS)
নাম না করেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে হোসাবলে বলেন, ‘যারা জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, তারা আজ সংবিধানের কপি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে(RSS)।কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত এর জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাননি।’কংগ্রেসকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা ১ লক্ষেরও বেশি মানুষকে জেলে পুরেছেন। ২৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে জেলে রেখেছেন, মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছেন এবং ৬০ লক্ষ ভারতীয়কে বন্ধ্যাত্বকরণ করতে বাধ্য করেছেন… আপনারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেষ করে দিয়েছেন। যারা এই কাজ করেছেন তারা কি দেশের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন? যদি আপনি নাও হয়ে থাকেন, আপনার পূর্বপুরুষরা হন, তাহলে তাদের নামে ক্ষমা চাইতে হবে।’
আরও পড়ুন-NIA Raids: সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বড় অভিযান! তিন রাজ্যে ১৮ জায়গায় তল্লাশি এনআইএ-র
কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া (RSS)
অন্যদিকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘যারা কখনও স্বাধীনতা সংগ্রাম বা সংবিধান প্রণয়নে অবদান রাখেননি, তারা এখন এটি রক্ষা করার দাবি করছেন(RSS)।প্রধানমন্ত্রী মোদী বারবার এমন একটি সময়কে স্মরণ করছেন যা দেশে অতীত হয়ে গেছে। তিনি এমন বিষয়ে ইস্যু করছেন যা মানুষ ইতিমধ্যে ভুলে গেছে।’ ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন ইন্দিরার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২১ মাসের ওই পর্বকে ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায়’ বলেন আরএসএসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা।

আরও পড়ুন-Telangana: রেললাইনের ওপর ছুটছে বেপরোয়া গাড়ি! বন্ধ ট্রেন চলাচল, তেলাঙ্গানায় হুলুস্থুল
জরুরি অবস্থা (RSS)
প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী সরকারের সংশোধনীর ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় যুক্ত হয়েছিল দু’টি শব্দ। যার ফলে ভারত ‘সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’ থেকে ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র’-এ পরিণত হয়(RSS)। এর আগের বছর দেশব্যাপী জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা। সেই সময় নির্বাচনে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এবং ছয় বছরের জন্য তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করেছিল। এরপরই জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।চলতি বছর ৫০ বছর পূর্ণ করল এমার্জেন্সি। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী-সহ কয়েকজন আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু শীর্ষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল।
