ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন সেনার একতরফা হামলা ঘিরে ফের বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প (Iran Israel Conflict)। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ চালিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের (Donald J. Trump) বিরুদ্ধে। শুধু বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টিই নয়, অভিযোগ তুলেছেন তাঁর নিজ দলের রিপাবলিকান নেতাদের একাংশও। ইতিমধ্যে হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বিধিভঙ্গের প্রস্তাবও জমা পড়েছে।
কংগ্রেসকে না জানিয়ে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’?(Iran Israel Conflict)
পেন্টাগনের তথ্যমতে, রবিবার গভীর রাতে আমেরিকা ৩৬টি ‘জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার ব্লাস্টার’ ও টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের ফোরডো, নাতান্জ এবং ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে আঘাত হানে। এই হামলার আগে ইরান কোনও মার্কিন ঘাঁটি বা ভূখণ্ডে হামলা চালায়নি—এই যুক্তি তুলে ধরে কংগ্রেসের একাধিক সদস্য বলেছেন, আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া এমন সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারেন না।
‘এইউএমএফ’-এর দোহাই (Iran Israel Conflict)
ট্রাম্প হামলার পর বক্তব্যে দাবি করেন, তাঁর পদক্ষেপ ২০০১ সালের ‘অথরাইজ়েশন ফর ইউজ় অফ মিলিটারি ফোর্স’ (AUMF) অনুযায়ী বৈধ(Iran Israel Conflict)। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সেই বিধি ছিল আল কায়দা ও তালিবানের মতো সুন্নি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। ইরান, একটি শিয়া রাষ্ট্র, যার সঙ্গে আইএস বা আল কায়দার যোগ নেই— সেখানে এই বিধি প্রয়োগের কোনও যুক্তি খাটে না।

রিপাবলিকানদের মধ্যেও ভাঙন
হাউসের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সদস্য টমাস ম্যাসি এক্স-এ লিখেছেন, “এই হামলা সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ। প্রেসিডেন্টের একার সিদ্ধান্তে যুদ্ধে জড়ানো যায় না(Iran Israel Conflict)।” ট্রাম্পের সমর্থক বলেই পরিচিত বেশ কিছু রিপাবলিকান সেনেটরও বিষয়টি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নেওয়া আমেরিকার গণতান্ত্রিক কাঠামোর বিরুদ্ধেই যায়।
ওবামা, রেগন, ট্রুম্যানও কি একই অপরাধে?(Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেন, “এই প্রথম নয়, অতীতে বহু প্রেসিডেন্ট আপৎকালীন সিদ্ধান্তে সেনা পাঠিয়েছেন(Iran Israel Conflict)।” উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন—
- বারাক ওবামা ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছাড়াই সাত দেশে ২৬ হাজারেরও বেশি হামলার অনুমোদন দেন।
- রোনাল্ড রেগন লিবিয়া ও লেবাননে সেনা পাঠান।
- হারি ট্রুম্যান কোরিয়ার যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়ান।
- জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ পানামার স্বৈরাচক উৎখাত করেন কংগ্রেস না জানিয়েই।
ওবামার সময় এইউএমএফ ব্যবহারের দৃষ্টান্ত থাকলেও সমালোচকরা বলছেন, ওই বিধির অব্যাহত অপব্যবহার আমেরিকান সংবিধানকেই দুর্বল করে দিয়েছে।

আইনের শাসন না রাষ্ট্রীয় সংকল্প?(Iran Israel Conflict)
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন দুই ভাগে বিভক্ত আমেরিকা (Iran Israel Conflict)।একদিকে নিরাপত্তার যুক্তি, অন্যদিকে সাংবিধানিক বিধির সীমাবদ্ধতা। এই বিতর্ক শুধু ট্রাম্পকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি, বরং সামনে এনেছে প্রশ্ন— আধুনিক যুদ্ধের যুগে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের হাতে ঠিক কতটা ক্ষমতা থাকা উচিত? এখন দেখার, কংগ্রেসের আইনসভার ভবিষ্যৎ বিতর্কে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এই সাংবিধানিক সংঘাত। মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক কঠিন পরীক্ষার মুহূর্ত।