ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চিনের সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত বাণিজ্যচুক্তি সই করল আমেরিকা (US India Trade Deal)। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এই ঘোষণা করেই ফের আন্তর্জাতিক কূটনীতির আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump)। তবে চিনে সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি—পরের চুক্তি যে ভারতের সঙ্গেই হতে চলেছে, সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন স্পষ্ট ভাষায়।
ট্রাম্পের ঘোষণা ও অবস্থান (US India Trade Deal)
হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা চিনের সঙ্গে (বাণিজ্য) চুক্তি করলাম। সব দেশের সঙ্গে করব না (US India Trade Deal)। কিন্তু পরের বড় চুক্তি হয়তো ভারতের সঙ্গেই হবে।” যদিও চিনের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তির নির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করেননি তিনি।
একই সঙ্গে ট্রাম্প তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, “সব দেশকে আমরা চুক্তি করব না। বরং অনেক দেশকে বলেছি—ধন্যবাদ, আপনাদের ২৫, ৩৫ বা ৪৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।” তিনি স্পষ্ট জানান, প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আরও বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চাইলেও, তিনি নিজে ‘নির্বাচিতভাবে’ এগোতে চান।
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির আবহ (US India Trade Deal)
ট্রাম্পের এই ঘোষণার নেপথ্যে রয়েছে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক নাড়াঘাঁটার বাস্তবতা(US India Trade Deal)। চলতি মাসেই ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, “স্বচ্ছ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে দুই দেশেরই অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা পায়।” মে মাসে, মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকও একইরকম আশা প্রকাশ করেছিলেন।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, ২০১৯-২০ সময়কালে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের ‘রিসিপ্রোকাল ট্রেড’ নীতির জেরে, ভারতের অনেক পণ্যের উপর শুল্ক চাপায় আমেরিকা—২৬% পর্যন্ত। যদিও সেই শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে হোয়াইট হাউস। কিন্তু চিন ছিল সেই ‘ছাড়’-এর বাইরে। বরং, ট্রাম্প প্রশাসন চিনা পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫% করে দেয়, যার পাল্টা জবাবে চিনও ১২৫% শুল্ক বসায় মার্কিন পণ্যে(US India Trade Deal)।

কৌশলগত বার্তা ও কূটনৈতিক চাপ (US India Trade Deal)
ট্রাম্প এও দাবি করেছেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত তিনিই থামিয়েছেন(US India Trade Deal)। বলেন, “আমি দুই দেশকে বলেছিলাম—যুদ্ধ থামাও, নইলে বাণিজ্যচুক্তি হবে না।” তাঁর বক্তব্যে সুস্পষ্ট কূটনৈতিক চাপের ছায়া মিলেছে। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও চুক্তির প্রসঙ্গ ট্রাম্প তোলেননি। তাঁর প্রশাসনের স্পষ্ট অবস্থান—‘উৎপাদনশীল এবং স্বচ্ছ অর্থনীতির’ দেশগুলির সঙ্গেই চুক্তি করবে ওয়াশিংটন।

চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির পরপরই ভারতের সঙ্গে ‘বড়’ চুক্তির বার্তা নিঃসন্দেহে মোদী সরকার ও দক্ষিণ ব্লকের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ।দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নতুন গতি আসতে পারে। যদিও ট্রাম্পের এই ইঙ্গিত কতটা বাস্তবায়িত হয়, আর ভারতের কী শর্ত মানতে হয়, তা আগামী সপ্তাহগুলিতেই স্পষ্ট হবে।তবে এটুকু নিশ্চিত যে, মার্কিন বাণিজ্যনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে এখন রয়েছে এশিয়ার দুই পরাশক্তি—চিন ও ভারত। আর সেই ভূমিকায় ফের নিজেদের কৌশলী প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছেন ট্রাম্প (US India Trade Deal)।