ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: মার্কিন নাগরিকত্ব আইন বদলাতে চাইলেও একাধিক আদালতের বাধার মুখে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(US Citizenship)। কিন্তু শুক্রবার কিছুটা স্বস্তি পেলেন তিনি। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, নিম্ন আদালতগুলি যেন একতরফা ভাবে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ না করে। যদিও পরবর্তী ৩০ দিন নতুন আইন কার্যকর করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কী ঘটেছে? (US Citizenship)
গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরই, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ১৫৬ বছরের পুরনো আইন বদলানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প (Donald J. Trump)। ২১ জানুয়ারি, দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। তিনি সই করেন একটি এক্সিকিউটিভ অর্ডারে, যার মূল লক্ষ্য— জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (Jus Soli) প্রথার অবসান ঘটানো(US Citizenship)।
আদালতের বাধা (US Citizenship)
এই অর্ডারের বিরুদ্ধে প্রথমে মামলা করে American Civil Liberties Union (ACLU)। এরপর এক সন্তানসম্ভবা অভিবাসী নারী ও পরে ডেমোক্র্যাট শাসিত ২২টি রাজ্য আদালতের দ্বারস্থ হয়।
তিনটি ফেডারেল আদালত—
- ওয়াশিংটন
- ম্যাসাচুসেটস
- মেরিল্যান্ড
এই অর্ডারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারা দাবি করে, ১৪তম সংশোধনীর মূল চেতনার পরিপন্থী এই পদক্ষেপ।

সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য (US Citizenship)
শুক্রবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের উপর বিচার বিভাগের নিরবচ্ছিন্ন কর্তৃত্ব থাকতে পারে না। অনেক সময় আইনই আদালতকে সীমাবদ্ধ করে।” তবে আদালত স্পষ্ট করে দেয় যে, ট্রাম্প প্রশাসন পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন আইন কার্যকর করতে পারবে না। অর্থাৎ, কার্যত একটি ‘কুলিং পিরিয়ড’ দিয়েছে আদালত।
Jus Soli কী? (US Citizenship)
‘Jus Soli’ হল একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ “মাটির অধিকার”।
- ১৮৬৮ সালের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া প্রত্যেক শিশু আমেরিকার নাগরিক বলে গণ্য হয়, তাদের বাবা-মা বিদেশি হলেও।
- ট্রাম্পের দাবি, এই নিয়ম অবৈধ অভিবাসীদের সুবিধা দেয় এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ বাড়িয়ে তোলে।
তিনি চান, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের জায়গায় অভিভাবকত্বের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব (Jus Sanguinis) চালু হোক, অর্থাৎ বাবা-মা আমেরিকান হলে তবেই সন্তান নাগরিকত্ব পাবে(US Citizenship)।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া (US Citizenship)
ডেমোক্র্যাট নেতারা ট্রাম্পের উদ্যোগকে “বর্ণবাদী ও মানবাধিকারের পরিপন্থী” বলেই মনে করছেন। রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশ যদিও বলছে, অভিবাসন সমস্যার সমাধানে এটা সময়োপযোগী।
আপাতত সুপ্রিম কোর্টের রায় ট্রাম্প প্রশাসনকে খানিকটা স্বস্তি দিলেও, তাঁর নাগরিকত্ব নীতি প্রয়োগের পথে এখনও আইনত বাধা রয়েছে। আগামী দিনগুলোয় মামলাটি কোন দিকে গড়ায়, আর তা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।