ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ‘যা করেছে তার জন্য পস্তাবে।’ এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় শিয়া ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি। দু’জনকে ঈশ্বরের শত্রু বলে ঘোষণা করেছেন তিনি(Iran issues Fatwa)।সেই সঙ্গে শীঘ্রই প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। ফলে ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত থামলেও বাগযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়।
দুই রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে ফতোয়া (Iran issues Fatwa)
রবিবার দুই রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে এই ফতোয়া জারি করেছেন মাকারেম শিরাজি(Iran issues Fatwa)। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি বা সরকার যদি মারজা (শিয়া ধর্মগুরু)-র বিরুদ্ধে হুঙ্কার দেয় তাহলে সেটা ঈশ্বরের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা। কোনও মুসলিম ব্যক্তি বা ইসলামিক রাষ্ট্র যদি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সেটাও অপরাধ। তাই এই দুই রাষ্ট্রপ্রধানকে শিক্ষা দিতে গোটা মুসলিম সমাজের একজোট হওয়া উচিত। সেই সংগ্রামে যদি কোনও মুসলিমের ক্ষতি হয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে ঈশ্বরের যোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’ ফতোয়া এক ধরনের ধর্মীয় আদেশ, যা ইসলামী আইনের ব্যাখ্যার মাধ্যমে একজন শীর্ষ আলেম জারি করেন। ইরানে পূর্বেও এমন বিতর্কিত ফতোয়া জারি হয়েছে, যার মধ্যে সলমন রুশদির বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সালের মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষ (Iran issues Fatwa)
এই ফতোয়া জারির নেপথ্যে নিঃসন্দেহে ইরান-ইজরায়েল সাম্প্রতিক সংঘর্ষ বড় ভূমিকা নিয়েছে(Iran issues Fatwa)। ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই সময় থেকেই প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।ইজরায়েলের হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক ঘাঁটিতে মৃত্যু হয় ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। এরপরেই ইরান পাল্টা মিসাইল হামলা চালায় তেল আভিভ-সহ গোটা ইজরায়েলে।।পরিস্থিতি চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের নিউক্লিয়ার ঘাঁটিতে হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন-Donald Trump’s Bill: ‘ধ্বংসাত্মক বিল!’ ফের ট্রাম্পের ‘বড় সুন্দর’ বিলকে নিশানা মাস্কের
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা (Iran issues Fatwa)
১২ দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Iran issues Fatwa)। আপাতত সংঘর্ষবিরতি মেনে চলছে ইরান ও ইজরায়েল।কিন্তু দুপক্ষে বাগযুদ্ধ চলছিলই। এহেন পরিস্থিতিতে দুই রাষ্ট্রপ্রধানকে নিশানা করে যেভাবে ফতোয়া জারি করল ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব, তার জেরে আবারও অশান্তি বাড়তে পারে বলে অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।

আরও পড়ুন-Top Advisor: ‘ভয় পাই না!’ ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি ‘মৃত’ খামেনেইয়ের প্রধান উপদেষ্টার
ইরানের অবস্থান (Iran issues Fatwa)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরও, ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধকরণ করা তারা বন্ধ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান(Iran issues Fatwa)। ট্রাম্প অবশ্য ইরানের এই অবস্থানকে অলীক কল্পনা হিসেবেই দেখছেন। এদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর উঠে আসছে, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে ইরান। এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা কখনওই সামরিকভাবে তা হতে দেব না। হামলার পর ইরান পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে গেছিল। তারাই বলেছে অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক হামলা হয়েছে। এই হামলা না হলে ইরান থামত না। এদিকে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাকচি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কখনওই বন্ধ করবে না ইরান। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে সরে আসছে তেহরান। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি।
