ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত মে মাসে ভারতীয় বায়ুসেনার (INDIAN ARMY) সফল ‘সিঁদুর অভিযান’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের জইশ-এ-মহম্মদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি উঠেছিল (Bahawalpur Camp In Pakistan)। কিন্তু সেই বহাওয়ালপুরের জামা-এ-মসজিদ সুভান আল্লাহ্ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-এর সুইমিং পুল ফের খুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে জইশ-এ-মহম্মদ। জঙ্গি গোষ্ঠী নিজেই সমাজমাধ্যমে পুল খোলার ছবি পোস্ট করে নিজেদের ‘পুনরুজ্জীবনের’ বার্তা দিয়েছে।গোয়েন্দা মহলের মতে, এটি নিছক একটি পুল খোলার ঘটনা নয়, বরং বহাওয়ালপুর ঘাঁটি যে ধ্বংসের পরেও পুনর্গঠন হচ্ছে, সেই বার্তাই দিতে চাইছে জইশ।
পুলওয়ামা-কাণ্ডের মূল ঘাঁটি (Bahawalpur Camp In Pakistan)
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জইশের আত্মঘাতী হামলার আগে, চার জঙ্গি— মহম্মদ উমর ফারুক, তালহা রশিদ আলভি, মহম্মদ ইসমাইল আলভি ও রশিদ বিল্লা— এই বহাওয়ালপুর ঘাঁটির পুলে স্নান করে ছবি তুলেছিল। সেই ছবি সে সময় ভাইরাল হয়েছিল (Bahawalpur Camp In Pakistan)। এবার আবার সেই পুল খুলে দিয়ে সেই পুরনো দাপট ফেরানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
প্রশাসনের দাবির বিপরীতে বাস্তব ছবি (Bahawalpur Camp In Pakistan)
পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রশাসন দাবি করেছিল, বহাওয়ালপুরের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকবে এবং ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদান চালু করা হবে (Bahawalpur Camp In Pakistan)। বাস্তবে কোনও শিক্ষার ব্যবস্থা হয়নি—বরং জইশের ক্যাম্প হিসেবেই এটি ব্যবহৃত হয়েছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি। ‘দ্য প্রিন্ট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘কর্মস্থল’-এ যাওয়ার আগে জঙ্গিরা এই শিবিরেই প্রশিক্ষণ নেয় এবং পুল ব্যবহার করে। ২০১৯ সালে আজহার মাসুদ-এর ভাই আবদুল রউফ রশিদ আলভি প্রায় দেড় কোটি পাকিস্তানি রুপি দিয়ে এই জমি কেনেন। এই আলভিকে আমেরিকা সন্ত্রাসবাদী হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।

সাম্প্রতিক হামলার আবহে উদ্বেগ বাড়ছে (Bahawalpur Camp In Pakistan)
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। এরপরই ভারত চালায় ‘সিঁদুর অভিযান’, যাতে বহাওয়ালপুরের ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ার দাবি ওঠে (Bahawalpur Camp In Pakistan)। কিন্তু মাত্র এক মাসের মধ্যেই পুল খোলার ঘটনা জইশের সংগঠিতভাবে ফিরে আসার ইঙ্গিত বহন করে। এমনকি জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের এক আত্মীয় সম্প্রতি রামমন্দির ধ্বংসের হুমকিও দিয়েছে। পাকিস্তানের নানা শহরে জইশের সদস্যদের মিছিল, ধর্মীয় নেতার শেষকৃত্য ঘটা করে পালন—সবই জঙ্গি সংগঠনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিরই চিহ্ন।

“এটি নিছক পুল নয়, বিপদের বার্তা” (Bahawalpur Camp In Pakistan)
ভারত সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ‘দ্য প্রিন্ট’-কে বলেন, “সুইমিং পুল খোলার বিষয়টি শুনতে ছোট মনে হলেও তা মোটেই সামান্য নয়(Bahawalpur Camp In Pakistan)। স্থানীয় গরিব বাচ্চাদের লক্ষ্য করেই জইশ সদস্য সংগ্রহ করে। এই পুল হল জঙ্গি দলে ভর্তির মূল আকর্ষণগুলির অন্যতম।” গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, জইশ ফের নতুন করে সদস্য নিয়োগ এবং জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

আরও পড়ুন: India US Trade Talks : ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে, বড় ঘোষণা হতে পারে ৮ জুলাই?
জঙ্গি ঘাঁটির পুনর্জন্ম কি সন্ত্রাসের নতুন চক্র শুরু করছে? (Bahawalpur Camp In Pakistan)
বহাওয়ালপুরের ক্যাম্প ও পুল খোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এখন অতন্দ্র। যদিও পাকিস্তান সরকার এখনো দাবি করে যাচ্ছে, জইশ নিষিদ্ধ, বাস্তব ছবি ভিন্ন কথা বলছে। ভারতের কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জইশের এই পদক্ষেপ শুধু প্রতীকী নয়, আসন্ন সংঘাত বা হামলার পূর্বাভাসও হতে পারে। তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক নজরদারি এবং পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধির।