ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে আবারও ভয়াবহ সন্ত্রাস(Pakistan Bomb Blast)। বুধবার (২ জুলাই) বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর জঙ্গিরা বাজ়াউর জেলার খার তহসিলের সিদ্দিকাবাদ রেলওয়ে এলাকায় নাওগাই সড়কে একটি সরকারি গাড়িতে গ্রেনেড হামলা চালায়। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন, আহত অন্তত ১১ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বাজ়াউরের সহকারী কমিশনার ফয়জল ইসমাইল, তহশিলদার আবদুল ওয়াকিল, দুই পুলিশকর্মী এবং এক সাধারণ নাগরিক। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করল টিটিপি (Pakistan Bomb Blast)
গ্রেনেড বিস্ফোরণের দায় ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে টিটিপি (Pakistan Bomb Blast)। পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানায়, এই হামলার মাধ্যমে সরকারের ‘অত্যাচারের’ বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে তারা। বাজ়াউর জেলার পুলিশ প্রধান ওয়াকাস রফিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘টিটিপি বিদ্রোহীরা পরিকল্পিতভাবে সরকারি অফিসারদের টার্গেট করেছিল। সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে।’’
শান্তি আলোচনা ভেঙে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা টিটিপি-র (Pakistan Bomb Blast)
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর থেকেই ফের আগ্রাসী হয়ে উঠেছে টিটিপি (Pakistan Bomb Blast)। তারা সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে জানায়, পাকিস্তান (Shehbaz Sharif) সেনাবাহিনী এবং আধাসেনা বাহিনীগুলি সংঘর্ষবিরতি ভেঙে একতরফা অভিযান চালাচ্ছে। তার পাল্টা হিসেবেই এই হামলা।
গত বছরের ডিসেম্বরেও (২৫ ডিসেম্বর ২০২৪) খাইবার-পাখতুনখোয়া সীমান্ত লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে টিটিপি-র ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমানহানা চালিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু আফগান তালিবান অভিযোগ তোলে, পাক বাহিনীর নিশানায় পড়েছে নিরীহ গ্রামবাসীরা।
পশ্চিম সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ (Pakistan Bomb Blast)
এই ঘটনার পর খাইবার-পাখতুনখোয়া-সহ গোটা পাকিস্তানজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে টিটিপি-র দাপট ক্রমেই বাড়ছে। সরকার এবং সেনা যৌথভাবে অভিযান চালালেও বিদ্রোহ দমন করা যাচ্ছে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তান সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত এই হামলা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও শোক প্রকাশ করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। একাধিক মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, ‘‘সমাধান অস্ত্রে নয়, বরং রাজনৈতিক সংলাপেই খোঁজার চেষ্টা করা উচিত।’’

উত্তপ্ত পরিস্থিতি, আতঙ্কে সাধারণ মানুষ (Pakistan Bomb Blast)
প্রতিনিয়ত ঘটে চলা এই ধরনের হামলায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাধারণ বাসিন্দারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটে। কখন কে টার্গেট হবে, বলা যায় না।”
সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান সরকারের নীতি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে কতটা কার্যকর, তা নিয়ে এবার আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।