ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: হিমাচল প্রদেশে প্রকৃতির ভয়াল রূপে ধ্বস্ত জনজীবন। মঙ্গলবার থেকে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে ১১ বার মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই(Himachal Pradesh Cloudburst)। এর মধ্যে মন্ডী জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তুমুল বৃষ্টি, হড়পা বান ও ভূমিধসের জেরে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ২৯ জন এখনও নিখোঁজ।
নিখোঁজদের সন্ধানে জোরদার উদ্ধার অভিযান (Himachal Pradesh Cloudburst)
জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF এবং SDRF), হোমগার্ড ও পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার কাজে নেমেছে। এখনও পর্যন্ত একাধিক দেহ উদ্ধার হয়েছে, কিন্তু নিখোঁজদের খোঁজে অভিযান জারি রয়েছে।সিরমৌর, কাংড়া, উনা, হমীরপুর-সহ একাধিক জেলায় চলছে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ।
ধসে রাস্তা বন্ধ, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন! বিপর্যয়ের ছাপ সর্বত্র(Himachal Pradesh Cloudburst)
- রাজ্যে ২৬১টি রাস্তা বন্ধ, যার মধ্যে ১৮৬টি শুধু মন্ডী জেলাতেই।
- ৫৯৯টি ট্রান্সফর্মার বিকল, ফলে বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
- ধসে ১৪টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত।
- ভেঙে পড়েছে ১৫০টিরও বেশি বাড়ি, ১০৪টি গবাদি পশুর খোঁয়াড়, ও প্রাণ হারিয়েছে ১৬২টি গবাদি পশু।
এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় স্তব্ধ, বহু এলাকায় জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: Kedarnath Yatra : উত্তরাখণ্ডে ধস, বন্ধ কেদারনাথ যাত্রা! পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ
আবহাওয়ার সতর্কতা আরও বিপদের আশঙ্কা(Himachal Pradesh Cloudburst)
ভারতীয় মৌসম ভবনের (IMD) পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহান্তে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উনা, হমীরপুর, কাংড়া এবং মন্ডী জেলায়(Himachal Pradesh Cloudburst)। এই কারণে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে ধস নামার আশঙ্কাও রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে(Himachal Pradesh Cloudburst)
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের সরকারি জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে।” সরকারি ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

উপসংহার: পাহাড়ি রাজ্যে বিপর্যয়, দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা(Himachal Pradesh Cloudburst)
প্রতিবছর বর্ষার সময়ে হিমাচল প্রদেশে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধস নিয়মিত চেহারা নিচ্ছে(Himachal Pradesh Cloudburst)। তবে এবারের পরিমাণ ও তীব্রতা আগের তুলনায় অনেক বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার তাগিদ উঠেছে সাধারণ মানুষের তরফেও। এখন প্রশ্ন—এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর কত দ্রুত হিমাচল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? জনগণের আশা, প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি যেন কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বাস্তবে রূপ পায়।