ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্যের মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা! পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর (Siddiqullah Chowdhury) গাড়িকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। কালো পতাকা দেখিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন তৃণমূলেরই একাংশ কর্মী। পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খায় পুলিশ। দলীয় কর্মীদের এই আচরণে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে গোটা বিষয়টি জানাবেন। এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
দলীয় কর্মীদের হামলায় আহত মন্ত্রী (Siddiqullah Chowdhury)
বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর ও মালডাঙ্গা যেন এক মুহূর্তে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর গাড়ি ও কনভয়ে হামলার ঘটনায় ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল উঠে এল শিরোনামে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মন্ত্রী বর্ধমানের পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন কুচুট গ্রাম থেকে। সেই সময় পথে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় ।
মন্ত্রী নিজে এবং তাঁর সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ, হামলাকারীরা তৃণমূলেরই একাংশের কর্মী-সমর্থক। শুধু মন্ত্রীর গাড়িই নয়, তাঁর কনভয়ের একাধিক গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়, বেধড়ক ভাঙচুর চলে প্রকাশ্য রাস্তায়।
বর্ধমান এসপির অফিসে অভিযোগ (Siddiqullah Chowdhury)
ঘটনার পর সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সোজা চলে যান বর্ধমানের পুলিশ সুপারের অফিসে। সেখানে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন মন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “এটা পরিকল্পিত হামলা। পুলিশ ও প্রশাসন সব জেনে-শুনে চুপ আছে। আইসি নিজেই নাটক করেছেন। এমন অপদার্থ অফিসার আগে দেখিনি।”
তিনি আরও জানান, “এই ঘটনার বিচার না হলে, আগামী ১০ জুলাই কলকাতায় বড় মিছিল হবে।” তাঁর এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, দলীয় অন্দরেই প্রবল ক্ষোভ জমে উঠেছে।
পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির (Siddiqullah Chowdhury)
ঘটনার পরপরই বিজেপির পক্ষ থেকেও জোরালো প্রতিক্রিয়া আসে। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “তৃণমূলের মন্ত্রীকেও যখন রক্ষা করতে পারে না এই সরকার, তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা বহুদিন ধরে বলছি, পুলিশ এখন দলদাসে পরিণত হয়েছে। আজ মন্ত্রীর মন্তব্যেই তা প্রমাণিত।”
তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দল? (Siddiqullah Chowdhury)
ঘটনার ঘণ্টাখানেক কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। রাজনৈতিক মহলে এই হামলা ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা—এই কি শুধুই গোষ্ঠীকোন্দল, নাকি দলের ভিতরেই নতুন বিভাজনের ইঙ্গিত? বিশেষজ্ঞদের মতে, সিদ্দিকুল্লাহর (Siddiqullah Chowdhury) মতো অভিজ্ঞ মন্ত্রীর উপর প্রকাশ্য হামলা যদি সত্যিই দলীয় কর্মীদের হাতেই হয়ে থাকে, তবে তা শাসকদলের জন্য অশনিসংকেত।
আরও পড়ুন: BJP: শুভেন্দুর হিন্দুত্ব বনাম শমীকের বহুত্ববাদ, বিজেপিতে ফের দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত?
এই ঘটনায় ফের স্পষ্ট, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সংঘাত ক্রমেই বাইরে প্রকাশ পাচ্ছে। রাজ্যের এক মন্ত্রীর ওপর প্রকাশ্য হামলা শুধু রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নও তুলে দিচ্ছে। এবার দেখার, মুখ্যমন্ত্রী ও দল কী পদক্ষেপ নেয়—নাকি এটিও বাকিদের মতো একটি ‘আভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেই পাশ কাটানো হবে?