ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজা উপত্যকায় দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটল প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস(Israel Hamas Conflict)। ৬০ দিনের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই ইজরায়েল এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল। শুক্রবার হামাসও যুদ্ধবিরতির পক্ষে সায় দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald J. Trump) চাপ এবং হুঁশিয়ারির পর এই সিদ্ধান্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
হামাসের ঘোষণা এবং আমেরিকার ভূমিকা (Israel Hamas Conflict)
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি, হামাস একটি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, “মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আমরা ইতিবাচক সাড়া জানিয়েছি। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আলোচনায় বসতে আমরা প্রস্তুত(Israel Hamas Conflict)।”
এই ঘোষণার ঠিক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দেন, “হামাস যদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি না দেয়, তবে ফল ভাল হবে না।” মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিশরকেও ট্রাম্প আহ্বান জানান হামাসের সঙ্গে আলোচনায় বসতে। বিশিষ্ট মধ্যস্থতাকারী প্যালেস্টাইনি-মার্কিন নাগরিক বিশারা বাহ্বাহ্ জানান, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর ফলে “অভিশপ্ত যুদ্ধ থামতে পারে”।
যুদ্ধবিরতির শর্ত (Israel Hamas Conflict)
যুদ্ধবিরতির আওতায় দুই পক্ষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মেনে নিয়েছে(Israel Hamas Conflict)।
- প্রথম দিনেই হামাস মুক্তি দেবে ৮ জন জীবিত ইজরায়েলি পণবন্দিকে।
- হামাসকে ফিরিয়ে দিতে হবে ১০ জন জীবিত এবং ১৮ জন মৃত ইজরায়েলি বন্দিকে।
- পাল্টা ইজরায়েলও মুক্তি দেবে কিছু প্যালেস্টাইনি বন্দিকে, যদিও নির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও ঘোষণা হয়নি।
- উত্তর গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে ইজরায়েল।
- যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হলে দুই পক্ষ স্থায়ী শান্তিচুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে।
- পণবন্দি মুক্তির জন্য নির্ধারিত হয়েছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ তারিখ।
‘চাপের চুক্তি’ না কি ‘চিন্তাশীল শান্তি’? (Israel Hamas Conflict)
প্রশ্ন উঠেছে, হামাস কি নিজস্ব রাজনৈতিক কৌশলেই যুদ্ধবিরতির পথে এসেছে, না কি আমেরিকার চাপেই পিছু হটেছে? যুদ্ধবিরতির শর্তাবলিতে মার্কিন হস্তক্ষেপের ভূমিকাই বড় বলে মনে করা হচ্ছে(Israel Hamas Conflict)। সিএনএন-এর রিপোর্ট বলছে, নতুন চুক্তিপত্রে আমেরিকা আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় এবং প্রভাবশালী ভূমিকা নিয়েছে।
ইজরায়েলি প্রশাসনের এক সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রথম থেকেই আশা করছিল হামাস যুদ্ধবিরতিতে সাড়া দেবে, যদিও কিছু শর্তে পরবর্তীতে পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে স্থায়ী শান্তির আশা এখন প্রবল।

অতীত সংঘাতের প্রেক্ষাপট (Israel Hamas Conflict)
২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইজরায়েলে হামাসের হামলায় প্রাণ যায় প্রায় ১২০০ জনের(Israel Hamas Conflict)। আড়াইশোরও বেশি মানুষকে বন্দি করা হয়। প্রতিক্রিয়ায় ইজরায়েল গাজায় ব্যাপক হামলা চালায়। জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হলেও মার্চে আবার ভেস্তে যায় সেই প্রক্রিয়া। এবার ৬০ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।

আরও পড়ুন: Russia China Relation : ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না চিন, স্পষ্ট বার্তা ওয়াং ই-র
হামাস-ইজরায়েল সমঝোতা (Israel Hamas Conflict)
গাজার আকাশে কি এবার একটু শান্তির আলো দেখা যাবে? হামাস-ইজরায়েল সমঝোতা যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা হতে পারে একটি বড় রাজনৈতিক ও মানবিক জয়। তবে এই যুদ্ধবিরতির নেপথ্যে যে কূটনৈতিক চাপ ও প্রভাব রয়েছে, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। এখন নজর থাকবে—এই সাময়িক বিরতি কি ভবিষ্যতের স্থায়ী শান্তির ভিত গড়তে পারে?