ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইজরায়েলের হামলার জেরে তিন সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হল ইরানের আকাশসীমা (Iran Israel Conflict)। পাশাপাশি চালু হল দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরও। তেহরান সরকারের এই সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতার পথে ফিরছে পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম উত্তপ্ত অঞ্চলের আকাশপথ।
তিন সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞার অবসান (Iran Israel Conflict)
১২ জুন রাতে ইজরায়েল একটি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইরানের একাধিক শহর ও পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায়(Iran Israel Conflict)। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানের পরই ইরান তার সমস্ত অসামরিক উড়ান এবং আকাশপথে চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরবর্তী ১২ দিন ধরে ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ চলে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছিল।
এই প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) হস্তক্ষেপ করেন। তাঁর মধ্যস্থতায় ২৪ জুন আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। এর পরে পর্যায়ক্রমে উত্তেজনা কমতে থাকে এবং অবশেষে ৪ জুলাই, শুক্রবার ইরান আকাশসীমা এবং বিমানবন্দরগুলো পুনরায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিমান চলাচল শুরু তেহরান-সহ সর্বত্র (Iran Israel Conflict)
সরকারি সংবাদ সংস্থা ইরনা-র প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তেহরানের মেহরাবাদ এবং ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-সহ দেশের চারটি অঞ্চলের (উত্তর, পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ) বিমানবন্দরগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে(Iran Israel Conflict)। শুধু ইসফাহান এবং তাবরিজ বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ থাকছে নিরাপত্তাজনিত কারণে। স্থানীয় সময় সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমস্ত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় চালু থাকবে বলে জানা গেছে। বিমান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ইতিমধ্যেই সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: Israel Hamas Conflict : গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস, চাপেই কি পিছিয়ে গেল?
মার্কিন ‘বি-২ স্পিরিট’ হামলা (Iran Israel Conflict)
যুদ্ধবিরতির আগের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায়, ২১ জুন গভীর রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্টেলথ বোমারু বিমান ‘বি-২ স্পিরিট’ ব্যবহার করে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্র— নাতান্জ, ফোরডো এবং ইসফাহান—-এ জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার-ব্লাস্টার বোমা ফেলেছিল। এই বোমাগুলি মাটির অনেক নিচে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ইরানকে কৌশলগতভাবে অনেকটাই পিছু হটতে বাধ্য করেছিল।

স্থিতিশীলতার সংকেত না কি অস্থায়ী শ্বাস? (Iran Israel Conflict)
ইরানের তরফে জানানো হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশের দিকেই এগোতে চায় এবং সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক করাই সরকারের উদ্দেশ্য। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই পদক্ষেপকে সাময়িক শ্বাস নেওয়ার কৌশল হিসাবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কারণ, ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
রানের আকাশসীমা ও বিমানবন্দর খুলে গেল (Iran Israel Conflict)
ইরানের আকাশসীমা ও বিমানবন্দর খুলে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ পুনরায় সহজ হচ্ছে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি ও যাত্রী পরিষেবা কিছুটা স্বস্তি পাবে(Iran Israel Conflict)।তবে সাম্প্রতিক অতীতে যে ধরণের সামরিক টানাপোড়েন দেখা গেছে, তাতে পরিষ্কার—এই শান্তি খুব বেশি স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। চোখ এখন থাকবে ইরান, ইজ়রায়েল ও আমেরিকার পরবর্তী কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপের দিকে।