ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: চলতি গ্রীষ্মে ইউরোপ জুড়ে (Heatwave in Europe) তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ জনজীবন। পশ্চিম ইউরোপ থেকে শুরু করে তা ছড়িয়ে পড়েছে মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপেও। দিনের বেলায় বাইরে বেরনোই দায় হয়ে পড়েছে। কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে, রাস্তাঘাট ফাঁকা পড়ে থাকছে, ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। অনেক জায়গায় পরিস্থিতি এমন যে, নাগরিকেরা বলছেন, ‘‘এ যেন আগ্নেয়গিরির উপরে বসে আছি।’’
ভয়াবহ মাছের মড়ক (Heatwave in Europe)
চেক প্রজাতন্ত্রে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার জেরে থায়া নদীতে দেখা (Heatwave in Europe) দিয়েছে ভয়াবহ মাছের মড়ক। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে নদী থেকে ৩০ টন মৃত মাছ তুলে ফেলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গরম এবং অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে এই বিপর্যয়। রাজধানী প্রাগে অতিরিক্ত এসির ব্যবহারে বিদ্যুৎচাপ বেড়ে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। একাধিক যাত্রী লিফটে আটকে পড়েন, যাঁদের পরে উদ্ধার করা হয়।
আগুন লেগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে (Heatwave in Europe)
আলবানিয়ায় তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে আবর্জনায় আগুন লেগে (Heatwave in Europe) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দমকলকর্মীরাও আগুন আয়ত্তে আনতে পারেননি। দেশটিসহ বসনিয়া, মন্টেনেগ্রো, সার্বিয়া, হারজ়েগোভিনায় জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। বসনিয়ার মস্টার শহরে তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, আর বেলগ্রেডে ৩৭ ডিগ্রিতে থেমেছে পারদ। দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই, রাস্তা ও রেস্তরাঁ খাঁ খাঁ করছে।
নেদারল্যান্ডসেও উদ্বেগ বাড়ছে
ইটালির সিসিলি দ্বীপে ২০২১ সালে যেভাবে তাপমাত্রা ৪৮.১ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল, বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন এ বছরও সেই অভিজ্ঞতা পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। রান্নাঘরের তাপমাত্রা সহ্য করতে না পেরে রাঁধুনিরা কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন। নেদারল্যান্ডসেও উদ্বেগ বাড়ছে। অ্যামস্টারডামে গৃহহীনদের জন্য খোলা হয়েছে ঠান্ডা আশ্রয়শিবির।

ফ্রান্সের প্যারিসে তাপমাত্রা ৩৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
জার্মানিতেও অবস্থার বিশেষ উন্নতি নেই। যদিও আইনি ভাবে কাজ বন্ধ করার নিয়ম নেই, কিন্তু কর্মীদের কথা মাথায় রেখে অনেক কোম্পানি কাজের সময় কমিয়ে দিচ্ছে, ফ্যানের ব্যবস্থা করছে। নির্মাণস্থলে ছায়া দেওয়া হচ্ছে। ফ্রান্সের প্যারিসে তাপমাত্রা ৩৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। রাস্তা ফাঁকা, চিজ় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে—পণ্য সংরক্ষণের উপযুক্ত পরিবেশ নেই, বিক্রিও কম।
আরও পড়ুন: Monsoon Trip Essential: বর্ষায় ভ্রমণ? অবশ্যই! কিন্তু প্রস্তুতি থাকা চাই পুরোদস্তুর
স্পেনে তাপপ্রবাহের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চার জন। বেড়েছে দাবানলের ঝুঁকি। রেস্তরাঁ ও ক্যাফেগুলিতে কাজ করা দুষ্কর হয়ে উঠেছে। এই সব পরিস্থিতি মিলিয়ে ইউরোপের পর্যটন শিল্প বড়সড় ধাক্কার মুখে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক পর্যটকই সমাজমাধ্যমে সতর্ক করছেন—এই গ্রীষ্মে ইউরোপ সফর এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। ফলত, পর্যটনের রাজস্বেও পড়েছে প্রভাব।