ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পশ্চিম এশিয়ার অস্থিরতায় ফের আগুন জ্বলল লোহিত সাগরে। রবিবার ইয়েমেন উপকূলের কাছে একটি বাণিজ্যিক জাহাজে গ্রেনেড হামলার ঘটনা চাঞ্চল্য তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক মহলে(Ship Attack Near Yemen)। হামলাকারীরা একাধিক ছোট নৌকায় করে আসে এবং জাহাজটিকে নিশানা করে, এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটেনের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস সংস্থা (UKMTO)।
কোথায় ও কীভাবে ঘটল হামলা? (Ship Attack Near Yemen)
ঘটনাটি ঘটেছে ইয়েমেনের আল হুদায়েদা শহর থেকে প্রায় ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে, লোহিত সাগরের অন্যতম ব্যস্ত এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ জলপথে(Ship Attack Near Yemen)। UKMTO জানিয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীটি কোনও প্রকার আগাম বার্তা ছাড়াই জাহাজটির দিকে এগিয়ে আসে ও গ্রেনেড হামলা চালায়। তবে জাহাজটির জাতীয়তা বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও স্পষ্ট নয়।
কারা জড়িত? (Ship Attack Near Yemen)
এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি(Ship Attack Near Yemen)। যদিও আন্তর্জাতিক মহলের সন্দেহ ইরানপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের দিকেই যাচ্ছে, কারণ এই উপকূলজুড়ে গত কয়েক বছর ধরেই হুথিরা সক্রিয়। হুথিরা ইতিপূর্বেও লোহিত সাগর হয়ে যাওয়া পণ্যবাহী জাহাজগুলিকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তবে আফ্রিকার কিছু জলদস্যু গোষ্ঠীও এই অঞ্চলে সক্রিয়, ফলে এই হামলা ঠিক কারা চালিয়েছে, তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে।

আরও পড়ুন: Donald Trump vs BRICS : ব্রিক্সকে হুমকি ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চিন-দক্ষিণ আফ্রিকা!
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ (Ship Attack Near Yemen)
এই ঘটনার পর ব্রিটেন সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে। অন্যদিকে আমেরিকা ও ব্রিটেনের যৌথ টাস্ক ফোর্স ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে, কারণ এই অঞ্চলটির নিরাপত্তা রক্ষা করতে গত বছর থেকেই তারা একত্রে নজরদারির দায়িত্ব নিয়েছে।
ইজরায়েলের অভিযোগ ও সম্ভাব্য সংযোগ (Ship Attack Near Yemen)
রবিবারই এই ঘটনার পাশাপাশি ইজরায়েল হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার অভিযোগ তুলেছে। যদিও লোহিত সাগরের জাহাজে হামলা এবং ইজরায়েলের দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ঘটনার মধ্যে কোনও প্রত্যক্ষ সংযোগ পাওয়া যায়নি এখনো।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চল? (Ship Attack Near Yemen)
লোহিত সাগরের এই উপকূলবর্তী অঞ্চল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথ। এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার মধ্যে সুয়েজ খাল সংযোগকারী এই রুট দিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ১২% পণ্য পরিবাহিত হয়(Ship Attack Near Yemen)। গাজা সংঘর্ষ শুরুর (অক্টোবর ২০২৩) কয়েক মাস পর থেকেই এই পথে জাহাজে হামলার সংখ্যা বেড়েছে। তখন থেকেই হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পণ্যের জাহাজগুলিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ উঠছে।
এই হামলার দায় যদি হুথিদের প্রমাণিত হয়, তা হলে তা আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথের নিরাপত্তা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠবে। ব্রিটেন ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে যেভাবে নিরাপত্তা বজায় রাখার চেষ্টা চলছে, তার কার্যকারিতা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। আপাতত, গোটা বিশ্ব নজর রাখছে — এই হামলা নিছক জলদস্যুতার অংশ, না কি ইরানপন্থী সশস্ত্র রাজনীতির আরেক দুঃসাহসিক প্রকাশ।