ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আগামীকাল ভারত বনধ (Bharat Bandh On July 9)। সরকারি পরিষেবাগুলিতে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে, অন্যদিকে স্কুল এবং বেসরকারি অফিস খোলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রের শ্রমিক (Bharat Bandh On July 9)
আসন্ন ৯ জুলাই, বুধবার দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট বা ‘ভারত বন্ধ’-এ অংশ নিচ্ছেন ২৫ কোটিরও বেশি সরকারি ক্ষেত্রের শ্রমিক (Bharat Bandh On July 9)। ব্যাঙ্কিং, ডাক পরিষেবা, খনি, নির্মাণ এবং পরিবহন খাতের শ্রমিকরা এই বনধে যোগ দিচ্ছেন। এই ধর্মঘটের জেরে সারাদেশে একাধিক সরকারি পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও, স্কুল ও বেসরকারি অফিসগুলি খোলা থাকবে বলে জানা গেছে।
কারা ডাক দিয়েছে ভারত বনধ? (Bharat Bandh On July 9)
দেশের ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ এই বনধের ডাক দিয়েছে (Bharat Bandh On July 9)। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একাধিক কৃষক সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠনও। তারা কেন্দ্র সরকারের “শ্রমিক-বিরোধী, কৃষক-বিরোধী ও কর্পোরেটপন্থী” নীতির বিরোধিতা করছে। ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, সরকার এমন সব অর্থনৈতিক ও শ্রম আইন সংস্কার চালু করছে, যা শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করছে, যৌথ দরকষাকষির ক্ষমতা হ্রাস করছে এবং কাজের পরিবেশ আরও খারাপ করছে। সবটাই করা হচ্ছে ‘Ease of Doing Business’-এর নামে। অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের অমরজিত কৌর জানিয়েছেন, “দেশজুড়ে কৃষক ও গ্রামীণ শ্রমিকরাও এই আন্দোলনে যোগ দেবেন।”
কেন প্রতিবাদ করছেন শ্রমিকরা? (Bharat Bandh On July 9)
এই ধর্মঘটের মাধ্যমে শ্রমিকরা যেসব বিষয়ে প্রতিবাদ করছেন তা হল; সরকারি নীতিতে শ্রমিক সুরক্ষা খর্ব হচ্ছে। চারটি নতুন শ্রম কোড, যাতে ধর্মঘট ও ইউনিয়ন গঠনের অধিকার কমে যায়। বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নাগরিক পরিষেবায় বাজেট ছাঁটাই। অবসরপ্রাপ্তদের পুনর্নিয়োগ করে যুব সম্প্রদায়ের চাকরির সুযোগ কেড়ে নেওয়া। গত দশ বছরে কোনও জাতীয় শ্রমিক সম্মেলন না হওয়া। প্রবাসী শ্রমিকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা। জননিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে আন্দোলন দমন।
আরও পড়ুন: Mounted Gun System: প্রতিরক্ষা উৎপাদনেই ভারতের শক্তির উত্থান! শত্রুকে কুপোকাত করবে ‘মাউন্টেড গান’
কারা অংশ নিচ্ছে ধর্মঘটে?
সরকারি ও বেসরকারি, উভয় ক্ষেত্রের শ্রমিকরা ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন। অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে, অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (AITUC), ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (INTUC), সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস (CITU), হিন্দ মজদুর সভা (HMS), সেল্ফ এমপ্লয়েড উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশন (SEWA), লেবার প্রগ্রেসিভ ফেডারেশন (LPF), ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (UTUC)।
সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা, গ্রামীণ শ্রমিক ইউনিয়ন, রেল, এনএমডিসি লিমিটেড ও ইস্পাত শিল্পের সরকারি কর্মচারীরা।
শ্রমিকদের দাবিদাওয়া কী?
ধর্মঘটীদের মূল দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে, চারটি শ্রম কোড বাতিল করতে হবে। ধর্মঘট ও ইউনিয়ন গঠনের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ শুরু করতে হবে। এমজিএনরেগার মজুরি বাড়িয়ে তা শহরেও চালু করতে হবে। সরকারি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নাগরিক পরিষেবা শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: Bee Swarm: বিমানের দরজায় ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি!বসে রইলেন যাত্রীরা, সুরাট বিমানবন্দরে হুলস্থুল
কোন কোন পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে?
এই ধর্মঘটে ব্যাহত হতে পারে; ব্যাঙ্ক ও বিমা পরিষেবা, ডাকঘরের কাজকর্ম, কয়লা খনি ও শিল্প উৎপাদন, সরকারি পরিবহন পরিষেবা, সরকারি অফিস ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কার্যক্রম, গ্রামে কৃষকদের নেতৃত্বে র্যালি। হিন্দ মজদুর সভার হরভজন সিং সিধু জানিয়েছেন, “ব্যাংক, ডাক, কয়লা খনি, কারখানা, রাজ্য পরিবহন; সবকিছুতেই প্রভাব পড়বে ধর্মঘটের কারণে।”
কী কী খোলা থাকবে?
ধর্মঘটের দিনে স্কুল ও কলেজ খোলা থাকবে। বেসরকারি অফিসে কাজ চলবে স্বাভাবিকভাবে। পাশাপাশি রেল পরিষেবা বন্ধ হওয়ার কোনও খবর নেই, তবে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।