ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে (Balochistan Bus Attack) ফের সহিংসতার রক্তাক্ত ছাপ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই প্রদেশের ঝোভ ও লরালাই জেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় দু’টি যাত্রীবোঝাই বাসকে জোর করে থামিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে অপহরণ করে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার সকালে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অপহৃতদের মধ্যে ন’জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার নেপথ্যে কারা (Balochistan Bus Attack)
ঘটনাটি ঘটেছে সুর-ডাকাই নামক এলাকায়, যেখানে পাহাড় ও জঙ্গলে (Balochistan Bus Attack) ঘেরা রাস্তাঘাট দুর্গম। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাসদুটি পাঞ্জাব প্রদেশের দিকে যাচ্ছিল, সেই সময় মুখ ঢেকে রাখা বন্দুকধারীরা বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে নেয়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয় ন’জনের দেহ। প্রত্যেকের শরীরে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন মিলেছে বলে জানিয়েছেন সরকারি আধিকারিক নাভিদ আলম। কারা এই ঘটনার নেপথ্যে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই হামলার পিছনে বালোচ বিদ্রোহীদের হাত থাকতে পারে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বালোচিস্তান (Balochistan Bus Attack)
উল্লেখ্য, বালোচিস্তান বহুদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর (Balochistan Bus Attack) হয়ে রয়েছে। এখানে সক্রিয় “বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি” (BLA) সহ একাধিক স্বাধীনতাপন্থী সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, বালোচিস্তানের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ বিশেষত খনিজ ও গ্যাস পাঞ্জাব প্রদেশে পাচার করা হচ্ছে, অথচ বালোচিস্তান রয়েছে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত।

মার্চ মাসে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলা
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে গত মার্চ মাসে ঘটে যাওয়া আরেকটি ভয়াবহ হামলার কথা। সেবার জাফর এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে পাহাড়ি সুড়ঙ্গের মধ্যে থামিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। ট্রেনের চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান, মৃত্যু হয় ২১ জন সাধারণ নাগরিক ও ৪ জন সেনা জওয়ানের। পাক সেনার পাল্টা অভিযানে ৩০ জনেরও বেশি বিদ্রোহীর মৃত্যু হয়েছিল, যদিও বালোচ সংগঠন সেই পরিসংখ্যান অস্বীকার করে।
আরও পড়ুন: Ajker Rashifol: চন্দ্র ও শুক্রের সমসপ্তক যোগ, কার ভাগ্য এবার চমকাবে?
বারবার এমন হামলা শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তোলে না, একই সঙ্গে স্পষ্ট করে দেয় বালোচিস্তানের ক্ষোভ কতটা গভীরে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও নিপীড়নের অভিযোগ, বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দিচ্ছে অস্ত্র। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা উন্নয়ন প্রকল্প আর বাস্তবতার মাঝে বিস্তর ফারাক, সেই ব্যবধানই যেন রক্তপাতের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে।