ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গতকালের ‘মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য কোনও শূন্যপদ নেই’ ঘোষণার পর আজ সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah on CM Post) যে ‘পূর্ণ সমর্থন’ বার্তা দিয়েছেন, তা সেই পদে অটল থাকার তার দৃঢ় সংকল্পকে তুলে ধরে।
দলীয় সমর্থন পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী রয়েছি: সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah on CM Post)
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah on CM Post) তাঁর ডেপুটি ডি কে শিবকুমারের (ডিকেএস) সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানান, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব, এমনকি গান্ধী পরিবার, সম্পূর্ণভাবে তাঁর পাশে রয়েছে। সিদ্দারামাইয়া বলেন, দলের সমর্থন না থাকলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে পারতেন না। ২০২৩ সালে শুরু হওয়া পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করাই তাঁর লক্ষ্য। তিনি বলেন, “নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন দলের উচ্চ নেতৃত্বের নয়। ডিকেএস-এর চ্যালেঞ্জ ইতিমধ্যেই মিটে গেছে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সম্পূর্ণ সমর্থন আমি পাচ্ছি… তারা সমর্থন না করলে আমি পদে থাকতাম না।”
দিল্লিতে ডিকেএস ও মুখ্যমন্ত্রীর ব্যস্ত সফর, কিন্তু সংকেত অন্য (Siddaramaiah on CM Post)
এই মুহূর্তে সিদ্দারামাইয়া ও ডিকেএস দুজনেই দিল্লিতে রয়েছেন (Siddaramaiah on CM Post)। কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে দলে নতুন নিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনার জন্য। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে আমন্ত্রণ জানানোও তাঁদের সফরের লক্ষ্য। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে রণদীপ সূরযেওয়ালার সঙ্গে তাঁদের বৈঠক ঘটনার অন্য দিকও তুলে ধরছে। গত সপ্তাহেই বেঙ্গালুরুতে এসে সূরযেওয়ালা একবার দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেই সূত্রেই নতুন করে আলোচনার প্রয়োজন পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সিদ্দারামাইয়া জানান, “গতকাল আমরা দু’জন সূরযেওয়ালার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। পৌর বোর্ড ও সংস্থাগুলিতে নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছি। দলীয় কর্মীদের সুযোগ দেওয়া নিয়েও কথা হয়েছে। ১৬ জুলাই সূরযেওয়ালা আবার বেঙ্গালুরু আসছেন। সেদিন চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে। গতকালের বৈঠক অসম্পূর্ণ ছিল।”
আরও পড়ুন: Axiom4Mission: মহাকাশেই বিশাল ভুরিভোজ, পৃথিবীতে কবে ফিরছেন শুভাংশুরা?
মুখ্যমন্ত্রিত্বে ছাড় নয়: সিদ্দারামাইয়া
বৃহস্পতিবার সিদ্দারামাইয়া জানান, মুখ্যমন্ত্রীর পদে কোনও শূন্যস্থান নেই। শুক্রবার ফের সেই বার্তা দেন তিনি। বলেন, “ডিকেএস নিজেই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ খালি নেই। ৫০-৫০ ফর্মুলা বলে কিছু নেই। আমি কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী।”
পুরনো ‘৫০-৫০ ফর্মুলা’ নিয়ে নতুন চাপানউতোর
২০২৩ সালে কংগ্রেস বিজেপিকে হারানোর পর থেকেই সিদ্দারামাইয়া ও ডিকেএস মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিবাদে জড়ান। ডিকেএস এই জয়ের অন্যতম রূপকার হিসেবে বিবেচিত হলেও, বিধায়কদের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেন সিদ্দারামাইয়া। তখন থেকেই খবর ছড়ায়, পাঁচ বছরের মেয়াদের অর্ধেক সময় পরে তিনি সরে দাঁড়াবেন, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে। সম্প্রতি ডিকেএস অনুগামী কিছু বিধায়ক সেই ‘চুক্তির’ প্রসঙ্গ ফের তুলতে থাকেন। তবে সিদ্দারামাইয়া ঘনিষ্ঠরা সেই দাবি বারবার উড়িয়ে দিচ্ছেন। এই বিতর্কের আবহেই কংগ্রেস নেতৃত্ব ফের রণদীপ সূরযেওয়ালাকে পাঠায়। তিনি কিছুটা হলেও সমস্যা মেটান, যদিও ডিকেএস পুরোপুরি খুশি হননি।
নতুন করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি শিবকুমার শিবিরে
তবে বিতর্ক এখনও থামেনি। ডিকেএস ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়ক সি পি যোগেশ্বর সম্প্রতি বলেন, ডিকেএস-এর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত। “অনেক বিধায়ক একজোট হয়েছেন… তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া প্রয়োজন… সকলেই তা চান,” বলেন তিনি। আরেক অনুগামী ইকবাল হুসেন বলেন, “শতাধিক বিধায়ক ডিকেএস-এর পাশে আছেন।” সব মিলিয়ে কর্ণাটকে কংগ্রেসের অন্দরমহলের এই সংঘাত যে এখনও মিটে যায়নি, তা স্পষ্ট হচ্ছে দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী ও ডেপুটির সাম্প্রতিক সক্রিয়তা থেকেই।