ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাঝেও যুদ্ধবিরতির আশায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ইজরায়েলের সঙ্গে স্থায়ী সংঘর্ষবিরতির লক্ষ্যেই নতুন করে ১০ জন ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস(Israel Hamas Conflict)। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই ইজরায়েলি সেনার আক্রমণে গাজায় আরও ৭৪ জন প্যালেস্টিনি নিহত হওয়ায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে তেল আভিভের সদিচ্ছা নিয়ে।
ট্রাম্পের দাবি ও হামাসের অবস্থান (Israel Hamas Conflict)
গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald J. Trump) দাবি করেছিলেন, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পন্ন হতে পারে। তিনি জানিয়েছিলেন, আমেরিকার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ আলোচনা শুরু করেছে এবং নেতানিয়াহুর সরকার ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত মেনে নিয়েছে।
কিন্তু হামাসের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইজরায়েলের একগুঁয়ে মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। হামাস বলেছে, “ইজরায়েল এখনও পর্যন্ত যেভাবে সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা দুরূহ হয়ে পড়েছে।”
হামাসের শর্ত ও মানবিক দাবিদাওয়া (Israel Hamas Conflict)
হামাস নেতা তাহের আল-নুনু জানান, গোষ্ঠীটি সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে(Israel Hamas Conflict)।। তবে সেই সঙ্গে তিনি জোর দেন চারটি মূল দাবির উপর:
- গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
- ফিলিস্তিনিদের জন্য অবাধ ও মর্যাদাপূর্ণ যাতায়াতের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
- গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
- সংঘর্ষ সম্পূর্ণরূপে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

গাজায় চলতে থাকা রক্তপাত ও দ্বিধা (Israel Hamas Conflict)
এই ঘোষণার পরও ইজরায়েলের সেনা হামলা অব্যাহত, যার ফলে বৃহস্পতিবার আরও ৭৪ জন প্যালেস্টিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে(Israel Hamas Conflict)।। এই মৃত্যু মিছিলে যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়ে সংশয় আরও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সমাজের একাংশ বলছে, এক হাতে যুদ্ধবিরতির বার্তা, অন্য হাতে বোমাবর্ষণ — ইজরায়েলের এই দ্বিচারিতা আলোচনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

প্যালেস্টিনিদের বহুদিনের দাবি স্বাধীনতা, মর্যাদা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। সেই লক্ষ্যেই হামাস আপাতত পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার মতো বড় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত হয়েছে। অন্য দিকে, ইজরায়েলের সেনা হামলা এবং নেতানিয়াহুর সরকার পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান নিলে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এখন দায়িত্ব মধ্যস্থতাকারী দেশগুলির, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উপর— তারা কতটা নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে পারে, তার উপরই নির্ভর করবে এই সংঘর্ষবিরতির বাস্তব রূপ।