ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে কার্যত ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছে ড্রিমলাইনার প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িং(Air India)। প্রাথমিক রিপোর্টে যা ইঙ্গিত তাতে বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভুলবশত বিমানের ইঞ্জিনের জ্বালানি বন্ধ হয়ে যাওয়াটাই দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে জ্বালানি বন্ধের নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কিনা সেটা তদন্তসাপেক্ষ। এই রিপোর্টে খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বোয়িং। তারা বলছে, আগামী দিনেও তদন্তে সহযোগিতা করবে তারা।
বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট (Air India)
বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট বলছে, দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে দুই ইঞ্জিনের জ্বালানিই ‘রান’ (চালু) থেকে কাটঅফ (বন্ধ) মুডে চলে যায়। ইঞ্জিন বন্ধের ঠিক আগের মুহূর্তে একজন পাইলট অপরজনকে বলেন, ‘ইঞ্জিন বন্ধ করলে কেন?’ অপর পাইলট জবাব দেন, ‘আমি কিছু বন্ধ করিনি(Air India)।’ ইঞ্জিন বন্ধের পর জরুরি ভিত্তিতে RAT (‘র্যাম এয়ার টার্বাইন) চালু করা হয়। এই RAT ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়। বিমান ওড়ার সময়ে জ্বালানি ঠিকঠাক ছিল। বিমান ওড়ার সময়ে ফ্ল্যাপ সেটিং এবং গিয়ারের অবস্থাও স্বাভাবিক ছিল। সেগুলি সঠিকভাবে পরীক্ষাও করা হয়। সব মিলিয়ে যা যা প্রাথমিক রিপোর্টে এসেছে তাতে বিমানের যান্ত্রিক গোলযোগের থেকে পাইলটদের ভুলের দিকেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে।

বিমানসংস্থা বোয়িং-র প্রতিক্রিয়া (Air India)
এএআইবি-র এই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে স্বস্তি পাওয়ার পর মুখ খুলেছে বোয়িং(Air India)। সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যাঁরা ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা। আমরা আগের মতোই এই তদন্তে সহযোগিতা করব। এবং আমাদের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখব।’ প্রাথমিক তদন্তের পর বোয়িংকে কোনও নোটিস দেয়নি এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। তবে বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বলছে, তারা এএআইবির থেকে ড্রিমলাইনার AI171 সম্পর্কে আরও তথ্য চাইবে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিবৃতি (Air India)
আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা এআই১৭১ ফ্লাইটে নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে(Air India)। এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এআই১৭১ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলির পাশে রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। আমরা এখনও শোকস্তব্ধ হয়ে আছি। এই কঠিন সময়ে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা।’ পাশাপাশি এই আবহে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-সহ সকল অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই বিষয়ে টটা গোষ্ঠীর উড়ান সংস্থা বলে, ‘তদন্তের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা এএআইবি এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে চলেছি।’

‘চলমান তদন্ত নিয়ে মন্তব্য নয়’ (Air India)
এএআইবি দ্বারা প্রকাশিত ১৫ পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে এয়ার ইন্ডিয়া(Air India)। তবে চলমান তদন্ত নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। এই নিয়ে সংস্থা বলে, ‘তদন্ত এখনও জারি আছে। তাই আমরা নির্দিষ্ট কোনও বিষয় সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারছি না এবং তদন্ত সংক্রান্ত যে কোনও প্রশ্নের ক্ষেত্রে এএআইবিকে যোগাযোগ করার আবেদন জানাচ্ছি।’ এদিকে, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমান বা জিই জিইএনএক্স-১বি ইঞ্জিন অপারেটর এবং নির্মাতাদের নিয়ে কোনও নিরাপত্তা সুপারিশ জারি করেনি এএআইবি। প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে সংগৃহীত আরও প্রমাণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এবং পর্যালোচনার পরেই এএআইবি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্ব (Air India)
যদিও বোয়িংয়ে যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না(Air India)। অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়ালের ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দার। ১১০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল তাঁরও। এহেন অভিজ্ঞ দুই পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করে দেবেন, সেটা অস্বাভাবিক। স্বাভাবিকভাবেই যান্ত্রিক গোলযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
