ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাশিয়া ইউক্রেনের উপর বিশাল ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে (Major Russian Airstrike)। ইউক্রেনের পশ্চিমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
যুদ্ধের শুরু থেকে প্রথমবার চেরনিভতসিতে হামলা (Major Russian Airstrike)
ইউক্রেনের পশ্চিমাংশে, যেসব অঞ্চল ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সীমান্তে অবস্থিত (Major Russian Airstrike), সেসব এলাকায় রাশিয়া তাদের সর্বশেষ বৃহৎ ড্রোন ও ক্রুজ মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন এবং বহু বসতবাড়ি ও অন্যান্য সাধারণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রেমলিন বাহিনী ইউক্রেনজুড়ে প্রায় ৬০০ রুশ ড্রোন ও ২৬টি ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। হামলার লক্ষ্যে ছিল চেরনিভতসি শহর, যেটি রোমানিয়া ও মলডোভার সীমানার কাছে অবস্থিত। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রার রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এই ঐতিহাসিক শহরে এটাই প্রথম হামলা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, চেরনিভতসিতে দুজন নিহত হয়েছেন এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ শহরেও বিশ্ববিদ্যালয়, সিটি কোর্ট এবং বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডোনেৎস্কের স্লোভিয়ানস্ক শহরে রুশ গোলায় একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র।
রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদন বৃদ্ধির পর হামলার তীব্রতা বেড়েছে (Major Russian Airstrike)
রাশিয়া সম্প্রতি তাদের ড্রোন উৎপাদন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে এবং প্রায় প্রতিদিন ৫০০-এরও বেশি ইউএভি (ড্রোন) হামলায় ব্যবহার করছে (Major Russian Airstrike)। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন মাসে ইউক্রেনে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ, নিহত ২৩২ ও আহত ১,৩৪৩ জন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে বলেন, “রাশিয়ার আকাশপথ থেকে টানা হামলার গতি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দাবি করে, এটি এখনই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রোধ করা সম্ভব।”
আরও পড়ুন: Hasina’s Daughter: ইউনুস সরকারের দাবিতে মান্যতা!হাসিনা-কন্যাকে অনির্দিষ্টকাল ছুটিতে পাঠাল ‘হু’
তিনি আরও বলেন, “আরও বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন, সেইসঙ্গে ইনসেপ্টর ড্রোনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, যেগুলো ইতিমধ্যেই ভালো ফল দিচ্ছে। আমাদের শুধু সঙ্কেত নয়, বাস্তব পদক্ষেপ চাই আমাদের আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছ থেকে, যা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে।”
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জবাব
ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, সর্বশেষ এই হামলায় তারা ২৫টি ক্রুজ মিসাইল ও ৩১৯টি ড্রোন গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়েছে। আরও ২৫৮টি ড্রোনকে তারা জ্যাম করেছে। তবুও একটি মিসাইল ও ২০টি লুইটারিং মিউনিশন পাঁচটি স্থানে আঘাত হানে এবং ১৯টি স্থানে ধ্বংসাবশেষ পড়ে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করেছে, এই হামলাগুলো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থা, সেনা নিয়োগ কেন্দ্র এবং একটি সামরিক বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। লভিভ, খারকিভ ও লুৎস্ক শহর বিশেষভাবে টার্গেট ছিল। মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার উপর দিয়ে ১৮৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
মার্কিন সামরিক সহায়তা ফের চালু
রাশিয়ার এই হামলার মধ্যেই শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, আমেরিকা ফের ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা পাঠানো শুরু করেছে, যা গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, “রিপোর্ট অনুযায়ী, সরবরাহ আবার চালু হয়েছে।” জেলেনস্কি তার প্রতিদিনের ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, “আমরা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক পর্যায়ে কাজ চালিয়ে যাব, বিশেষ করে আমাদের সামরিক বাহিনী ও জেনারেল কিথ কেলগের নেতৃত্বে।”