ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সুন্নি ধর্মগুরু কান্দাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার হস্তক্ষেপে শেষ মুহূর্তে ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃ্ত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি ইয়েমেন(Death Penalty)। যাঁকে খুনের দায়ে কেরলের নিমিশার এই মৃত্যুদণ্ড, সেই তালাল আব্দো মাহদির পরিবার ও ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওই ধর্মগুরু। কিন্তু নিহতের ভাই আব্দেলফাতা মাহদি জানিয়ে দিলেন, নিমিশাকে তাঁরা ক্ষমা করবেন না। তিনি যা করেছেন তা অপরাধ। তাঁকে মৃত্যুদণ্ড পেতেই হবে।
নিহতের ভাইয়ের সওয়াল (Death Penalty)
কেরলের বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গিয়েছে ইয়েমেনে(Death Penalty)। যার ফলে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছে ভারতীয় নার্সের পরিবার। ১৬ জুলাই তাঁর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৫ জুলাই জানা যায় আপাতত কার্যকর হচ্ছে না নার্সের মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এই ঘটনায় অখুশি নিহতের ভাই আব্দেলফাতা মাহদি।তিনি বলেছেন, ‘নিমিশার অপরাধের কোনও ক্ষমা হতে পারে না। মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত।’ এরপর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকেই নির্যাতিত হিসাবে তুলে ধরার বিকৃত চেষ্টা করছে।’ ভারত সরকার কার্যত হাত তুলে নেওয়ার পরে নিহতের পরিবারের চাহিদা মতো আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিমিশার প্রাণভিক্ষার দিকটি বিবেচনা করা হচ্ছিল। এখন সেই পথও কার্যত বন্ধ হয়ে গেল।

নিমিশা প্রিয়ার মৃ্ত্যুদণ্ড স্থগিত (Death Penalty)
সোমবারই জানা গিয়েছিল, নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলিম ধর্মগুরু কান্দাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার(Death Penalty)। ইয়েমেনের ধর্মীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। এরপরই ইয়েমেনের ধর্মগুরু শেখ উমর হাফিজ কথা বলেন নিমিশা যেখানে কাজ করতেন সেই পরিবারের প্রধান তালাল আবদুল মাহদির সঙ্গে। সেই আলোচনাতেই শেষ মুহূর্তে নিমিশার ফাঁসি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেখ উমরের সহকারী হুসেন সাকাফি এই কথা জানিয়েছেন।নিমিশা হুথি নিয়ন্ত্রিত একটি কারাগারে বন্দি আছেন। হুথিদের সঙ্গে ভারতের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও নিমিশার জন্য আশার আলো দেখা দিয়েছে।তবে এই মৃত্যুদণ্ড এড়াতে এবং তাঁকে নিরাপদে ভারতে ফিরিয়ে আনার পথ এখনও অনেকটাই দীর্ঘ।
আরও পড়ুন-Pahalgam Attack: ‘ভারত সন্ত্রাসবাদকে বরদাস্ত করবে না!’ এসসিও বৈঠকে পাকিস্তানকে তুলোধোনা জয়শঙ্করের
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পরিবার (Death Penalty)
নিমিশার ফাঁসির আদেশ কার্যকর হওয়া আটকাতে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয় তাঁর পরিবার(Death Penalty)। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে বিষয়টিতে কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করে, সেই আর্জি জানান তাঁরা। তবে কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইয়েমেনে বন্দি তরুণীর মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে আর বিশেষ কিছু করার নেই ভারত সরকারের। তাঁর মৃত্যুদণ্ডের প্রসঙ্গে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণী গত সোমবার শীর্ষ আদালতে বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। একটা পর্যায় অবধি আমরা যেতে পারতাম এবং তত দূর পর্যন্ত গিয়েওছিলাম। সরকারের আর কিছু করার নেই। ইয়েমেন নিয়ে স্পর্শকাতরতার বিষয়টি দেখুন। এই দেশটিকে (ইয়েমেন) কূটনৈতিক ভাবে ভারত স্বীকৃতি দেয়নি।’ সরকারি স্তরে আর কিছু করা সম্ভব নয় বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দেন তিনি।

আরও পড়ুন-Bihar Vote: ‘রিল দেখে সময় নষ্ট…,’ বিহার ভোটার মুখে তরুণদের সতর্ক করলেন ওয়াইসি
ইয়েমেনের জেলে বন্দি ভারতীয় (Death Penalty)
কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনের এক হাসপাতালে কাজ করতেন (Death Penalty)। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী ও কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা সেখানে থেকে যান। এক ব্যক্তিকে হত্যার অপরাধে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে এই মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় ইয়েমেনের আদালত। তাঁর প্রাণ বাঁচাতে এত বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে এসেছে নিমিশার পরিবার। তাঁর প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছলে তা খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রশিদ মহম্মদ আল আলিমি। এই পরিস্থিতিতে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড রদ করতে তৎপর হয় বিদেশমন্ত্রক। অবশেষে সাময়িক ভাবে হলেও আটকানো গিয়েছে তাঁর ফাঁসি।
