ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ধনকড়ের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য যেসব নাম বিবেচনা করা হচ্ছে (How will the next vice-president be chosen) তার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, যিনি সরকারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত।
ইস্তফার পেছনে স্বাস্থ্যজনিত কারণ, চিঠিতে উল্লেখ ধনখরের (How will the next vice-president be chosen)
সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখর হঠাৎ পদত্যাগ করেন (How will the next vice-president be chosen)। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতেই তিনি অবিলম্বে পদত্যাগ করছেন। এই ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনের পরেই পদত্যাগ (How will the next vice-president be chosen)
এই পদত্যাগ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন সদ্য শেষ হয়েছে (How will the next vice-president be chosen)। মঙ্গলবার তাঁর রাজ্যসভা চেয়ারম্যান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক—ব্যবসা উপদেষ্টা কমিটির মিটিং— পরিচালনা করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পদত্যাগ করলেন তিনি। চিঠিতে ধনখর লেখেন, “স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে আমি ভারতীয় সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে অবিলম্বে ইস্তফা দিচ্ছি।”
২০২২ সালে দায়িত্ব গ্রহণ, ২০২৭ পর্যন্ত মেয়াদ থাকার কথা ছিল (How will the next vice-president be chosen)
৭৪ বছর বয়সি ধনখর ২০২২ সালের আগস্ট মাসে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৭ সালে। তাঁর এই সময়কাল রাজনৈতিকভাবে উত্তাল ছিল। বিরোধীদের সঙ্গে তীব্র মতবিরোধ ও সংঘর্ষ একাধিকবার হয়েছে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীরা ইমপিচমেন্ট বা অপসারণ প্রস্তাবও আনেন, যা রাজ্যসভার উপসভাপতি হরিবংশ খারিজ করে দেন।
ধনখরের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি
চলতি বছরের মার্চ মাসে জগদীপ ধনখরের হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়, দিল্লির এইমসে তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়েছিল। কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিছু অনুষ্ঠানেও তাঁকে দুর্বল দেখা গিয়েছিল, তবে তিনি সংসদীয় কাজে সক্রিয় ছিলেন।
আরও পড়ুন: ECI: আধার-ভোটার-রেশন কার্ডে সায় নেই! সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা নির্বাচন কমিশনের
ইতিহাসে তৃতীয় উপরাষ্ট্রপতি যিনি পূর্ণ মেয়াদ শেষের আগে পদত্যাগ করলেন
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ধনখর হলেন তৃতীয় উপরাষ্ট্রপতি যিনি মেয়াদ শেষের আগেই পদত্যাগ করলেন। এর আগে ১৯৬৯ সালে ভি ভি গিরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পদত্যাগ করেন। ২০০৭ সালে ভৈরোঁ সিং শেখাওয়াত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হেরে গিয়ে ইস্তফা দেন।
এখন কী হতে চলেছে?
সরকার এখনও পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি কে হবেন, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। সংবিধান অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতির পদ খালি হলে রাজ্যসভার উপসভাপতি বা রাষ্ট্রপতির মনোনীত অন্য কোনও সদস্য সেই দায়িত্ব পালন করতে পারেন। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নিয়ম সংবিধানের ৬৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনী কলেজের সদস্যরা একক স্থানান্তরযোগ্য ভোট পদ্ধতিতে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেন। শাসক এনডিএ জোট যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই তারাই সম্ভাব্য প্রার্থী নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা নেবে।
সম্ভাব্য উত্তরসূরির নাম ঘিরে জল্পনা
উপসভাপতি হরিবংশ, যিনি জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর সাংসদ এবং ২০২০ সাল থেকে উপসভাপতির পদে রয়েছেন, তিনিই অন্যতম সম্ভাব্য নাম বলে শোনা যাচ্ছে। সরকারের কাছে তিনি ভরসাযোগ্য বলেও ধরা হয়।
প্রার্থী হওয়ার শর্ত
ভারতের নাগরিক হতে হবে, কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়স হতে হবে এবং রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে। ভারত সরকার, রাজ্য সরকার অথবা স্থানীয় কোনও সংস্থা থেকে বেতন পাওয়া পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা এই পদে নির্বাচনের যোগ্য নন।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
ধনখরের আকস্মিক পদত্যাগে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “উপরাষ্ট্রপতির এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের এই হঠাৎ পদত্যাগ বিস্ময়কর এবং ব্যাখ্যাতীত… স্বাস্থ্য অবশ্যই অগ্রাধিকারের বিষয়। তবে এই হঠাৎ সিদ্ধান্তের পেছনে আরও কিছু আছে বলেই মনে হচ্ছে।”
রাজনৈতিক তাৎপর্যও বড়
জগদীপ ধনখরের ইস্তফা শুধু এক সাংবিধানিক পদে পরিবর্তন নয়, বরং এর রাজনৈতিক তাৎপর্যও বড়। তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন, সে বিষয়ে এখন রাজনৈতিক মহল কৌতূহলের সঙ্গে অপেক্ষা করছে।