ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গাজায় দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনায় নতুন অচলাবস্থা তৈরি হলো(Israel Hamas Conflict)। বৃহস্পতিবার ইজরায়েল সরকার ও আমেরিকা উভয়ই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে তারা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনার পথে আর এগোতে চাইছে না। গাজ়ার জটিল পরিস্থিতি ও পণবন্দিদের মুক্তির মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে এতদিন যে আলোচনা চলছিল, তা আপাতত থমকে গেছে।
ইজরায়েলের অবস্থান (Israel Hamas Conflict)
বৃহস্পতিবার সকালেই ইজরায়েল প্রশাসন তাদের আলোচনাকারী দলকে গাজা থেকে ফিরিয়ে এনেছে(Israel Hamas Conflict)। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের এক শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, এই প্রত্যাহারের মাধ্যমে আলোচনার সমাপ্তি বোঝানো হয়নি। বরং যুদ্ধবিরতির পরবর্তী সম্ভাব্য কৌশল ও শর্তগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতেই দলকে ডাকা হয়েছে। ইজরায়েলের অভিমত, হামাসের সঙ্গের আলোচনায় সুস্পষ্ট অগ্রগতি না হলে তারা একতরফা সিদ্ধান্ত নেবে।
নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন যে হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, কারণ যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ইজরায়েলের হাতে থাকা উচিত। এই অবস্থান হামাসের সঙ্গে আলোচনা আরও কঠিন করে তুলছে।
আমেরিকার ঘোষণা (Israel Hamas Conflict)
ইজরায়েলের কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রশাসনও একই পথে হাঁটে(Israel Hamas Conflict)। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এক বিবৃতিতে জানান, “হামাসের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছনোর ইচ্ছার অভাব স্পষ্ট। এখন আমরা পণবন্দিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য বিকল্প কৌশল ভাবছি। পাশাপাশি গাজার সাধারণ মানুষের জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ চালাব।” তবে কীভাবে বন্দিদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি।

হামাসের শর্ত ও প্রতিক্রিয়া (Israel Hamas Conflict)
ইজরায়েলের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে রাজি হলেও কিছু শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে ছিল:
- সীমান্তে ইজরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণ ও উপস্থিতি কমাতে হবে।
- বন্দি বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইজরায়েল কতজন প্যালেস্টিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, তা স্পষ্ট করতে হবে।
হামাসের এই প্রতিক্রিয়ার পরই ইজরায়েল এবং আমেরিকা তাদের আলোচনাকারী দল সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট (Israel Hamas Conflict)
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইজরায়েল ও আমেরিকার এই পদক্ষেপ পুরোপুরি আলোচনা বন্ধ করার ইঙ্গিত নয়, বরং একটি কৌশলগত চাপ সৃষ্টির প্রয়াস(Israel Hamas Conflict)। আলোচনার অচলাবস্থা দূর করার জন্য নতুন শর্ত বা প্রস্তাব সামনে আনতেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরের সময় নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে (Donald J. Trump) স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন যে তিনি হামাসের যুদ্ধবিরতির আন্তরিকতা নিয়ে সন্দিহান। নেতানিয়াহুর বক্তব্য, যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে গাজা প্রশাসনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকা উচিত নয়। তিনি গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং হামাসের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করে আসছেন।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা (Israel Hamas Conflict)
এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি আলোচনার পুনরারম্ভ অনিশ্চিত। যদিও ইজরায়েল প্রশাসনের একাংশ আশাবাদী যে নতুন শর্তাবলি নিয়ে আলোচনার দরজা আবারও খোলা হতে পারে(Israel Hamas Conflict)। আমেরিকাও বিকল্প কৌশলের মাধ্যমে পণবন্দিদের নিরাপদ মুক্তির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে মানবিক সংকট, অন্যদিকে রাজনৈতিক অনমনীয়তা — উভয়ই গাজ়ার শান্তি ফেরানোর পথে বড় বাধা।