ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি আদৌ হবে কি না, সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা ক্রমশ বাড়ছে (US Tariff On India)। একদিকে আলোচনার দরজা খোলা থাকলেও, অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির। ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, আগামী ১ অগস্ট থেকে ভারত-সহ একাধিক দেশের পণ্যের উপর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে চড়া আমদানি শুল্ক চাপানো হতে পারে।
‘ভাল বন্ধু’ তকমা, কিন্তু দ্বৈত অবস্থান (US Tariff On India)
যদিও ট্রাম্প ভারতকে ‘ভাল বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন, তবু তিনি অভিযোগ করেছেন, “বন্ধু হয়েও ভারত আমেরিকার পণ্যের উপর বিশ্বের অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি শুল্ক ধার্য করে(US Tariff On India)। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ভারত আমাদের ভাল বন্ধু, কিন্তু তারা প্রায় অন্য দেশের তুলনায় দ্বিগুণ শুল্ক নেয়। এটা বন্ধুত্বের পরিপন্থী।”
শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা (US Tariff On India)
এই বছরের শুরুতেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যে সমস্ত দেশের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি হয়নি, তাদের উপর অন্তত ১৫-২০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে(US Tariff On India)। এপ্রিল মাসে তিনি ঘোষণা করেন, সব দেশের উপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চাপানো হবে, যা পরবর্তীতে বাড়িয়ে ২০-২৫ শতাংশ করার কথা বলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের লক্ষ্য হল আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। সেই লক্ষ্যেই তিনি আমদানি নির্ভরতা কমাতে চড়া শুল্কের মাধ্যমে বিদেশি পণ্যকে নিরুৎসাহিত করছেন। ভারতের ক্ষেত্রেও এই পদক্ষেপ আসন্ন বাণিজ্যচুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টির কৌশল হতে পারে।
চুক্তির অগ্রগতি ও জটিলতা (US Tariff On India)
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং দু’পক্ষই আশাবাদী(US Tariff On India)। পাঁচ দফার আলোচনাও হয়েছে। তবে দুধ, কৃষি, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান এখনও কঠোর।
এই প্রসঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির বলেন, “ভারতের সঙ্গে এখনও কিছু বিষয়ে দর কষাকষির প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত এখনও বাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত করতে নারাজ।”

আরও পড়ুন: Earthquake in Russia : ৭৩ বছরে সবচেয়ে তীব্র ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প রাশিয়ায়! প্রভাব কোথায় কতটা?
পটভূমি ও রাজনৈতিক বার্তা (US Tariff On India)
গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প ভারতের উপর ২৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথা বলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়(US Tariff On India)। কিন্তু এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের (Donald J. Trump) শুল্ক সংক্রান্ত সাম্প্রতিক মন্তব্য কূটনৈতিক চাপ বলেই মনে করছেন অনেকেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, ভারত যেন দ্রুত বাজার খোলে এবং আমেরিকান পণ্যের প্রবেশ সহজ করে। তবে দেশের স্বার্থে ভারতও নিজস্ব অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি নয়।
আরও পড়ুন: Meghalaya Coal Missing : মেঘালয়ে খনি থেকে উধাও ৪০০০ টনেরও বেশি কয়লা!
এই মুহূর্তে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চললেও, চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয়নি। তারই মাঝে ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত মন্তব্য ভারতীয় শিল্প ও কূটনৈতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। আগামী ১ অগস্ট কী হয়, তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহল।