ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কর্নাটকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নাতি ও জেডিএসের প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্বল রেভান্না-কে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করল বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত(Prajwal Revanna)। ধর্ষণ, জোর করে আটকে রাখা, হুমকি এবং যৌন হেনস্থার একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত প্রজ্বল গত বছরের অন্যতম বিতর্কিত রাজনৈতিক মুখ হয়ে ওঠেন। এবার বিচারালয়ে উপস্থাপিত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগকে আরও জোরালো করল।
প্রজ্বলের কাকা এইচডি কুমারস্বামী দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেই রাজনৈতিক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও, আদালতের রায়ে তাঁর কোনও প্রভাব পড়েনি, বলে মনে করছেন আইনজীবী মহল।
ঘটনার পটভূমি (Prajwal Revanna)
২০২১ সালে কোভিড অতিমারির সময় প্রথম এই নির্যাতনের সূচনা(Prajwal Revanna)। নির্যাতিতা এক ৪৮ বছর বয়সি মহিলা, যিনি হোলেনারসিপুরার রেভান্না পরিবারের মালিকানাধীন একটি বাগানবাড়িতে কাজ করতেন। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে জোর করে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন প্রজ্বল। এমনকি বেঙ্গালুরুর বাড়িতেও একইরকম ঘটনা ঘটে। প্রতিটি ঘটনাই ভিডিয়ো করে রেখে পরে তা দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হত নির্যাতিতাকে—যদি মুখ খোলেন, ‘ভয়ানক’ পরিণতি হবে।
তদন্ত এবং চার্জশিট (Prajwal Revanna)
কর্ণাটক পুলিশের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গত এপ্রিলেই চার্জশিট পেশ করে, যেখানে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়—৩৭৬(২)(কে), ৩৭৬(২)(এন), ৩৫৪, ৫০৬ ও ২০১, এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬(ই) ধারায়(Prajwal Revanna)। তদন্ত চলাকালীন প্রজ্বল ছিলেন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেও ব্যর্থ হন, কারণ আদালত মনে করে, তিনি প্রভাব খাটিয়ে তদন্তে বাধা দিতে পারেন।

আরও পড়ুন: Disproportionate Case : ৩০ কোটির সম্পত্তি উদ্ধার! কর্নাটকে প্রাক্তন কেরানির বাড়িতে তল্লাশি
পেনড্রাইভ কেলেঙ্কারি এবং পালিয়ে যাওয়া (Prajwal Revanna)
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হাসন কেন্দ্র থেকে জেডিএস প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান প্রজ্বল(Prajwal Revanna)। ঠিক সেই সময় প্রকাশ্যে আসে একটি পেনড্রাইভ, যাতে তাঁর ‘অশ্লীল’ ভিডিয়ো থাকার অভিযোগ ওঠে। ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই জেডিএস থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এরপর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দেশে ফিরে এলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রভাব (Prajwal Revanna)
এই মামলাটি শুধু একটি অপরাধমূলক ঘটনা নয়, বরং ভারতের রাজনীতিতে ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীক হয়ে উঠেছে(Prajwal Revanna)। একজন সাংসদ, যিনি দেশের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করেন, তাঁর বিরুদ্ধে এমন ভয়ঙ্কর অভিযোগ শুধু বিরোধীদের নয়, দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও গভীর ক্ষোভ ও আস্থাহানির জন্ম দিয়েছে।
এই রায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, যেখানে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও দোষীকে রেয়াত করা হয়নি। আগামী দিনে এই রায় অনেকের কাছে সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করতে পারে—আইনের চোখে সকলেই সমান। এবং নারী নির্যাতনের মতো জঘন্য অপরাধ কোনও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আড়াল হতে পারে না।