ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বন্ধুত্ব-এ এক অনন্য সম্পর্ক, রক্তের বন্ধনে না বাঁধা হলেও হৃদয়ের টানে গড়ে ওঠে যে সম্পর্ক, তা বহু সময় রক্তের সম্পর্ককেও হার মানায় (Friendship Day)। এই বিশেষ সম্পর্ককে উদযাপন করতেই প্রতিবছর পালিত হয় ‘বন্ধুত্ব দিবস’ বা ‘Friendship Day’। বন্ধুত্বের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হওয়া এই দিবস আজ এক সার্বজনীন আবেগে পরিণত হয়েছে।
বন্ধুত্ব দিবসের সূচনা (Friendship Day)
বন্ধুত্ব দিবস পালনের সূচনা হয় ২০ শতকের শুরুতে। ১৯৩০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীটিং কার্ড কোম্পানি “Hallmark” এর প্রতিষ্ঠাতা জয়স হল প্রথম এই দিবসটির প্রস্তাব দেন। উদ্দেশ্য ছিল জুলাই মাসের প্রথম রবিবার বন্ধুর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করা এবং উপহার দেওয়া। যদিও আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট উদ্যোগ হিসেবে প্রথমে অনেকেই একে গুরুত্ব দেননি, তবুও এই ভাবনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীকালে গভীর সামাজিক গুরুত্ব পায়।
জাতিসংঘের স্বীকৃতি
২০১১ সালে জাতিসংঘ ৩০ জুলাইকে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ মনে করে, বিশ্বব্যাপী শান্তি, সৌহার্দ্য ও সহানুভূতির প্রসারে বন্ধুত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। জাতিসংঘের এই উদ্যোগ বন্ধুত্ব দিবসকে বৈশ্বিক মর্যাদা এনে দেয়।
কোন দেশে কবে পালিত হয়?(Friendship Day)
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্ধুত্ব দিবস ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালিত হয়(Friendship Day)। যেমন—
- বাংলাদেশ ও ভারত: প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার দিনটি পালিত হয় বন্ধু দিবস হিসেবে।
- যুক্তরাষ্ট্র: ফেব্রুয়ারির তৃতীয় রবিবার ‘National Friendship Day’ হিসেবে পালিত হয়।
- লাতিন আমেরিকা: মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলসহ অনেক দেশে ৩০ জুলাই বন্ধুত্ব দিবস পালিত হয়, যা জাতিসংঘের ঘোষিত তারিখের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বন্ধুত্ব দিবসের রীতি
এই দিনে বন্ধুরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়, উপহার দেয়, একসাথে সময় কাটায় এবং বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুত্বের ছবি ও বার্তা শেয়ার করে(Friendship Day)। স্কুল-কলেজপড়ুয়া তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এক রীতির অংশ হচ্ছে ‘বন্ধু-ব্যান্ড’ বা ‘Friendship Band’ পরানো। অনেকে বন্ধুকে বিশেষ চিঠি বা পোস্টকার্ডও দেয়।
আধুনিক যুগে বন্ধুত্ব দিবস (Friendship Day)
ডিজিটাল যুগে বন্ধুত্ব দিবসের রূপ আরও আধুনিক হয়েছে(Friendship Day)। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ নানা প্ল্যাটফর্মে বন্ধুত্ব দিবস ঘিরে ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ, স্ট্যাটাস এবং রিল ভিডিও এখন খুব সাধারণ বিষয়। বিভিন্ন ব্র্যান্ড এই দিনে বন্ধুত্ব নিয়ে বিশেষ প্রচারাভিযান চালায়।
আরও পড়ুন: Daily Horoscope: রবিবারের রাশিফলে কী লেখা আছে?
বন্ধুত্ব দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক উদযাপন নয়, এটি আমাদের সামাজিক জীবনে বন্ধুত্বের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিন। একদিনের উৎসবের মাঝে লুকিয়ে থাকে সারাবছর একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার। বন্ধুত্ব যদি হয় নিঃস্বার্থ, আন্তরিক আর বিশ্বাসভিত্তিক, তবে সেটিই জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এই বন্ধুত্ব দিবসে আসুন, আমরা নতুন করে মনে করিয়ে দিই—একজন প্রকৃত বন্ধু কখনোই পিছনে ফেলে যায় না।