ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ঝাড়খণ্ডের রাজনীতির ইতিহাসে এক অধ্যায়ের অবসান। প্রয়াত হলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিবু সোরেন (Shibu Soren)। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। সোমবার সকালে দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
দিল্লির হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন ‘গুরুজি’ (Shibu Soren)
জানা গিয়েছে, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে কিডনির সমস্যার কারণে শিবু সোরেনকে দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যায়। ২ অগস্ট তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। জানা যায়, মাস দেড়েক আগে তিনি স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। টানা এক মাস ধরে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সোমবার সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:Disproportionate Case : ৩০ কোটির সম্পত্তি উদ্ধার! কর্নাটকে প্রাক্তন কেরানির বাড়িতে তল্লাশি
ছেলের পোস্টে নিশ্চিত হলো মৃত্যুর খবর (Shibu Soren)
বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্ত সোরেন বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে পৌঁছান। সোমবার সকালে তিনি সমাজমাধ্যমে বাবার মৃত্যুসংবাদ দেন। একটি সংক্ষিপ্ত অথচ আবেগঘন পোস্টে তিনি লেখেন, “শ্রদ্ধেয় দিশোম গুরুজি আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আজ আমি শূন্য হয়ে গেলাম।” এই বার্তায় প্রকাশ পায় এক সন্তানের ব্যথা, আর একটি রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের ভার।
রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ ইতিহাস (Shibu Soren)
শিবু সোরেন তিনবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। প্রথমবার ২০০৫ সালে মাত্র ১০ দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলান। এরপর ২০০৮ থেকে ২০০৯ এবং ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আরও দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারে কয়লা মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলান। পরে অবশ্য কয়লা দুর্নীতির মামলায় তাঁর নাম উঠে আসে।
ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের অগ্রণী মুখ (Shibu Soren)
‘গুরুজি’ নামে পরিচিত শিবু সোরেন ছিলেন ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চলা আন্দোলনের অন্যতম মুখ। তাঁর নেতৃত্বেই বিহার ভেঙে ২০০০ সালে তৈরি হয় ঝাড়খণ্ড। সাঁওতাল ও আদিবাসী সমাজের অধিকার আদায়ে তাঁর ভূমিকা আজও ইতিহাসে স্মরণীয়।
আরও পড়ুন:Prajwal Revanna : ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাতি প্রজ্বল রেভান্না!
শিবু সোরেনের মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রতিনিধিরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শোকাবহ অনুষ্ঠান ও সম্মানসূচক শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের আয়োজন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।