ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বর্ষার জেরে টানা বৃষ্টিতে (Death in Thunderstorm) ভিজছে বাঁকুড়ার মাঠঘাট। সেই সঙ্গে বজ্রপাতের আতঙ্কও যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের। সম্প্রতি, ইন্দাস এবং পাত্রসায়েরে বজ্রপাতের জোড়া ঘটনায় প্রাণ হারালেন দু’জন কৃষক।
মাঠে কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু (Death in Thunderstorm)
ইন্দাস থানার পলাশি গ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে রাজু বাগদী নামে (Death in Thunderstorm) এক কৃষকের। অন্যদিকে পাত্রসায়ের থানার পাটিত গ্রামে মারা গেছেন জয়ন্ত মণ্ডল। দু’জনেই মাঠে আমন চারা রোপণের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে, তাঁরা বজ্রাঘাতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পুলিশ তাঁদের দেহ উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
গত ১৫ দিনে ১১ জনের মৃত্যু (Death in Thunderstorm)
এর আগে ২৪ জুলাই একই দিনে বাঁকুড়ায় বজ্রাঘাতে প্রাণ হারান ৯ জন। সেই ক্ষত না শুকোতেই ফের বজ্রপাত কেড়ে নিল আরও দুই প্রাণ। চলতি বর্ষা মরসুমে একের পর এক নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় বাঁকুড়ায় লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে মাঝে মাঝেই সৃষ্টি হচ্ছে বজ্রগর্ভ মেঘ, যার ফলে বাড়ছে বজ্রপাতের ঘটনা। শুধু বাঁকুড়াই নয়, ২৪ জুলাইয়ের সেই ভয়াবহ দিনে রাজ্যের পাঁচ জেলায় মারা গিয়েছিলেন মোট ১৮ জন। পূর্ব বর্ধমানে ৫, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২, পুরুলিয়া ও দক্ষিণ দিনাজপুরে একজন করে প্রাণ হারান।
কেন বাড়ছে এত বজ্রপাতের ঘটনা?
এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে-কেবল প্রাকৃতিক কারণেই কি এত বজ্রপাত, নাকি এর পেছনে রয়েছে মানুষের ভূমিকাও? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ হল বাতাসে দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধি। বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে। তাপমাত্রা ও চাপের তারতম্যও এর পিছনে ভূমিকা রাখছে।
গ্লোবাল ওয়ার্মিংই আসল কারণ
আধুনিক নির্মাণের ফলে বদলেছে বায়ুপ্রবাহ। উঁচু কংক্রিটের বাড়ি, পিচের রাস্তা-সব মিলিয়ে গরম আরও বাড়ছে, আর তা থেকেই তৈরি হচ্ছে ঘন ঘন বজ্রগর্ভ মেঘ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত বলেন, ‘‘গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে এখন সমস্ত আবহাওয়া চরমে পৌঁছচ্ছে। তাই বজ্রপাতের পরিমাণও বাড়ছে।’’
আরও পড়ুন: Weather Update: টানা বর্ষণে ভিজছে রাজ্য, উত্তরে জারি কমলা সতর্কতা, দক্ষিণে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা!
বজ্রপাতের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
বজ্রপাতের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মেঘের নিচের দিকে থাকে নেগেটিভ চার্জ, আর ওপরে থাকে পজিটিভ চার্জ। মাটিতেও জমা হয় পজিটিভ চার্জ। এই বিপরীত চার্জের সংযোগ ঘটলে মাঝের বাতাস আয়নিত হয়ে তৈরি হয় বিদ্যুৎ পরিবাহিত পথ-‘স্টেপড লিডার’। সেখান দিয়েই মেঘের ভয়ঙ্কর শক্তি নেমে আসে মাটিতে, ঘটে প্রাণঘাতী বজ্রপাত।