Last Updated on [modified_date_only] by Debu Das
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট একনায়ক কিম উন (Kim Jong Un) বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব রুখতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন (North Korea)। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—বিদেশি সিনেমা ও টিভি অনুষ্ঠান দেখার অভিযোগে কয়েকজন নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে পিয়ংইয়ং সরকার। আগে বিদেশি গান বা নাটক শোনার কারণে কারাদণ্ড দেওয়া হলেও এখন শাস্তির মাত্রা ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি প্রধান নিশানায় (North Korea)
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, বিদেশি সংস্কৃতির মধ্যে উত্তর কোরিয়া সবচেয়ে বেশি ভয় পাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবকে(North Korea)। ভৌগোলিক সান্নিধ্য ও ভাষাগত মিলের কারণে উত্তর কোরিয়ার অনেক মানুষ গোপনে দক্ষিণ কোরিয়ার গান শোনেন, নাটক ও সিনেমা দেখেন। বিশেষত ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ ধরনের কনটেন্টের প্রসার বাড়ছে। কিন্তু কিম উন এটিকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছেন। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার সাংস্কৃতিক প্রভাব মুছে দিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পোশাকেও নিষেধাজ্ঞা (North Korea)
শুধু গান, সিনেমা বা নাটক নয়, এমনকি পোশাকেও নেমেছে সরকারি হস্তক্ষেপ(North Korea)। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেদের সাদা পোশাক পরার প্রচলন রয়েছে। উত্তর কোরিয়ায়ও সেই প্রথা জনপ্রিয় হচ্ছিল। কিন্তু কিম উনের সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন থেকে বিয়েতে সাদা রঙের পোশাক পরতে পারবেন না উত্তর কোরীয় কনে। এর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক প্রভাবের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে সরকার।

আরও পড়ুন : NATO : রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে পূর্ব সীমান্তে ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ অভিযান ন্যাটোর
নজরদারি ও শাস্তির ভয় (North Korea)
বিদেশি যোগাযোগ বা বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবের বিরুদ্ধে নজরদারি আরও জোরদার করেছে উত্তর কোরিয়ার সরকার(North Korea)। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে বিদেশি গান শোনা, নাটক দেখা বা সিনেমা দেখার প্রমাণ পাওয়া গেলে দেওয়া হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি জেল বা কঠোর কারাদণ্ড। অনেক ক্ষেত্রে সেই শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেও গড়াচ্ছে। ফলে নাগরিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বেগ (North Korea)
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন(North Korea)। তিনি বলেন, “এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকেরা আগের চেয়ে আরও বেশি দুর্ভোগ, নিপীড়ন এবং আতঙ্কের শিকার হবেন।” জাতিসংঘ বারবার কিম উনের সরকারের কাছে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে উত্তর কোরিয়ায় অবস্থার উন্নতি হয়নি।
আরও পড়ুন : Indian Navy : আকাশ হামলা ঠেকাতে থ্রিডি র্যাডার পেল ভারতীয় নৌসেনা!
বিশ্লেষকদের মতামত
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিম উনের এই পদক্ষেপ আসলে জনগণের উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার কৌশল। বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব বন্ধ করে মানুষকে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে(North Korea)। এর ফলে উত্তর কোরিয়ার জনগণের মৌলিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংস্কৃতিক বিকাশ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিদেশি গান-নাটক থেকে শুরু করে সিনেমা ও পোশাক—সব ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে উত্তর কোরিয়া এক ভয়ঙ্কর দমননীতির পথে হাঁটছে। কিম উনের সরকার যে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাকে রাষ্ট্রীয় শত্রু হিসেবে দেখছে, তার জেরেই শাস্তির মাত্রা ক্রমশ বাড়ানো হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, আর উত্তর কোরিয়ার সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসছে অন্ধকারের ছায়া।