Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ছুটির দিনেও বৃষ্টি যেন পিছু ছাড়ছে না আকাশ থেকে (Weather Report)। ইতিমধ্যেই আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আজ রবিবার ভোর থেকেই শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ প্রায় সমস্ত জেলাতেই কমবেশি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া চলবে আগামী কয়েকদিন। এর ফলে একদিকে নদী-নালা, জলাধার উপচে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে বাড়তে পারে বিপত্তি।
সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই সমস্ত জেলায় ইতিমধ্যেই কমলা সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদদের মতে (Weather Report)
বর্তমান দুর্যোগের মূল কারণ বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া একাধিক নিম্নচাপ অঞ্চল (Weather Report)। পশ্চিম-মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি ঘূর্ণাবর্তের জেরে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্তটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫.৮ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করছে। আগামী দু’দিনে এই নিম্নচাপ ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ছত্তিশগড়ের দিকে চলে যাবে বলে অনুমান। পাশাপাশি মৌসুমি অক্ষরেখা বর্তমানে অমৃতসর, মুজফ্ফরনগর, ডালটনগঞ্জ হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তর-পশ্চিম ঝাড়খণ্ডের উপর আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় রয়েছে। যদিও এটির প্রভাব সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের উপর পড়বে না, তবে পরোক্ষভাবে মৌসুমি বায়ুকে আরও সক্রিয় করে তুলবে।

কলকাতায় আবহাওয়া (Weather Report)
আজ রবিবার কলকাতার ন্যূনতম তাপমাত্রা ২৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনভর মূলত মেঘলা আকাশ থাকবে এবং ছিটেফোঁটা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। পয়লা জুন থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় এই মৌসুমে মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় ১১৯৫.৪ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। পশ্চিমবঙ্গের ১৪টি জেলায় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক রয়েছে, ৫টি জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে, আর অবশিষ্ট ৪টি জেলায় রয়েছে বৃষ্টির ঘাটতি।

দক্ষিণবঙ্গের সতর্কতা জারি (Weather Report)
হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এই জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। তাই এই অঞ্চলে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

হলুদ সতর্কতা জারি (Weather Report)
আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বিশেষ করে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়াতে বৃষ্টি হতে পারে। টানা দু’দিন বজ্রঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই হলুদ সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে।
বুধবার পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। তবে সেদিন আপাতত বড় কোনও বিপদের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এরপর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফের কলকাতা সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে এই দু’দিন কোনও সতর্কতা জারি হয়নি।
আরও পড়ুন : Ind vs Pak Asia Cup : পাহেলগাঁওয়ের পর প্রথম বার ২২ গজে মুখোমুখি ভারত-পাক!

উত্তরবঙ্গের পূর্বাভাস (Weather Report)
আজ উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই তিন জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কালিম্পং, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে।
আগামী সোমবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি থাকবে। বুধবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে বৃষ্টির পরিমাণ ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। শুক্রবার শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ারেই ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে এবং সেখানে হলুদ সতর্কতা বহাল থাকবে।