Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: ইউরোপের রাজপথ যেন ক্রমশ ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে (London)। একদিকে নেপালের অশান্তি, অন্যদিকে ফ্রান্সের বিস্ফোরণ তারপর এবার লন্ডনের উত্তাল চিত্র। সরকারের নানা নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এতটাই উগ্র আকার ধারণ করেছে যে, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক স্তম্ভ পর্যন্ত কেঁপে উঠেছে। শনিবারের লন্ডনের বিক্ষোভ যেন সেই অস্থিরতার সর্বশেষ রূপ।

কেন উত্তাল লন্ডন? (London)
লন্ডনের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়েছিলেন মূলত অভিবাসন নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে। এই বিক্ষোভের অন্যতম মুখ ছিলেন টম রবিনসন, যিনি একজন অতি-ডানপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর আহ্বানেই লক্ষাধিক মানুষ পথে নেমে গর্জে ওঠেন “আমাদের দেশ আমাদের ফিরিয়ে দাও”।
এমন স্লোগান লন্ডনের নাগরিকদের মুখে কেন? অভিযোগ উঠছে, অবৈধ অভিবাসন প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এতটাই বেড়েছে যে, ইংরেজদেরই মনে হচ্ছে তাঁরা যেন নিজেদের দেশে সংখ্যালঘু হয়ে যাচ্ছেন। বিশেষত যেসব দেশ একসময় ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল, সেসব দেশের অভিবাসীরা এখন লন্ডনে বিপুল সংখ্যায় বসবাস করছেন। এই বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনে ক্ষোভ নতুন নয়। ছোটখাটো বিক্ষোভ, অসন্তোষ বারবার প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু শনিবারের কর্মসূচি যেন রূপ নিল বিশাল জনআন্দোলনে।
শুধু তাই নয়, অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে যেমন একাধিক মানুষ পথে নেমেছিলেন, তেমনি সমর্থনেও পালটা বিক্ষোভ হয়। ফলে দুই পক্ষ মুখোমুখি হতেই পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ (London)
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামতেই বিক্ষোভকারীদের একাংশ সরাসরি পুলিশের ওপর হামলা চালান। লাথি-ঘুষি পর্যন্ত খেতে হয়েছে পুলিশকে। লন্ডনের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, সংঘর্ষে অন্তত ২৬ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে কারও নাক ভেঙেছে, কারও দাঁত, আবার কারও শিরদাঁড়ায় মারাত্মক আঘাত লেগেছে। ইতিমধ্যে ঘটনায় ২৫ জনকে আটক করেছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিকবার অভিবাসন সংক্রান্ত ঘটনায় লন্ডন উত্তপ্ত হয়েছে। অল্পদিন আগেই ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতনের দায়ে এক ইথিওপীয় নাগরিক গ্রেপ্তার হলে, আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসস্থল হোটেলের বাইরে ব্যাপক অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভ হয়।
ব্লক এভরিথিং কী? (London)
লন্ডনের মতোই সম্প্রতি উত্তাল হয়েছে ফ্রান্স। বুধবার প্যারিসসহ একাধিক শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আগুন ধরিয়ে দেয়, রাস্তা অবরোধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে শুরু করে। এই বিক্ষোভের মূল কারণ প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। আন্দোলনের নাম রাখা হয়েছে “ব্লক এভরিথিং”।
কেন এই আন্দোলন? (London)
ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন, সব মিলিয়ে মানুষের রাগ ও হতাশা বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে। এই বিক্ষোভ সেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ মাত্র।
- রাজনৈতিক অস্থিরতা
- অর্থনৈতিক উদ্বেগ
- সামাজিক অসন্তোষ
আরও পড়ুন : NATO : রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে পূর্ব সীমান্তে ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ অভিযান ন্যাটোর
ইউরোপে অস্থিরতা
নেপাল, ফ্রান্স, লন্ডন তিনটি ভিন্ন দেশ, কিন্তু দৃশ্যপট প্রায় একই। সরকারের নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ, বিশেষত অভিবাসন এবং রাজনৈতিক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।