ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: প্রায় এক দশকের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর পতন হল সিরিয়ার(Syria) শাসক বাশার আল-আসাদের(Bashar al-Assad)। গত রবিবার গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে(Damascus) প্রবেশ করেন বিদ্রোহীরা।এরপর থেকে রাজধানী দামাস্কাসের দখল নিয়েছে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা(America attacks Syria) ।এজন্য রাজধানী দামাস্কাস ছেড়ে পালিয়ে যান বাশার আল-আসাদ।রাশিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে, সিরিয়া ছেড়ে বাশার আল-আসাদ নিজের পরিবার নিয়ে রাশিয়ায়(Russia)পালিয়ে গেছেন।
সিরিয়ায় হামলা আমেরিকার (America attacks Syria)
বাশার আল- আসাদ রাজধানী দামাস্কাস ছেড়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থকদের ব্যাপক উচ্ছাস দেখতে পাওয়া যায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া(America attacks Syria) জুড়ে। সিরিয়ার বেশ কিছু এলাকাতে বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।আর এরই মধ্যে সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে আমেরিকা(America) ।সিরিয়ার আইসিস ঘাঁটি লক্ষ্য করে রবিবার হামলা চালিয়েছে আমেরিকা।আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে,সিরিয়ায় অবস্থিত কমপক্ষে ৭৫টি আইসিস ঘাঁটিতে গোলাবর্ষণ করা করেছে।
জো বাইডেনের বিবৃতি (America attacks Syria)
গত রবিবার এই নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন,আইসিস সিরিয়ার মসনদের শূন্যতা কে ব্যবহার করতে পারে,তা আমেরিকা জানে।আর আমেরিকা সেটা হতে দেবে না।রবিবার মার্কিন সেনা সিরিয়ার আইসিস ঘাঁটি গুলিতে হামলা চালিয়েছে(America attacks Syria)। আকাশপথেও গোলাবর্ষণ করা হয়েছে সিরিয়ার তরফে। আইসিস গোষ্ঠীকে দমিয়ে রাখতে দক্ষিণ-পূর্ব সিরিয়ায় ৯০০ সেনাবাহিনী রেখেছে আমেরিকা।তার মাধ্যমেই রবিবার হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Syrian President: বিদ্রোহীদের দখলে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট!
ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তায় তৎপর ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের
এরই মধ্যে সিরিয়ায় থাকা ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে,সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে সচল রয়েছে ভারতীয় দূতাবাস।আরও জানানো হয়েছে, সিরিয়াতে বসবাস করা ভারতীয় নাগরিকদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছে সেদেশে থাকা ভারতীয় দূতাবাস।সোমবার ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে,ভারত পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।সিরিয়ার ঐক্যতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা পক্ষে রয়েছে ভারত।সিরিয়ায় বর্তমানে ৯০ জন ভারতীয় রয়েছে বলে জানা গেছে।যাদের মধ্যে ১৪ জন ভারতীয় রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জরিত।
সিরিয়ায় মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মাধ্যমে পূর্ব প্রেসিডেন্ট আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গুলি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, গত কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার হরণ করা হয়েছে।তাদের তরফে জানানো হয়েছে আসাদের পতন সেখানে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এটা ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’।তবে উতপ্ত সিরিয়ায় শান্তি ফিরে আসে কিনা সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।এক সপ্তাহ আগেই পরিস্থিতি আঁচ করে সেখানে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের জন্য একটি নির্দেশিকা দিয়ে সাবধানে চলাফেরা করার কথা জানিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস।
আরও পড়ুন: Hama City Capture: আলেপ্পো পর এবারে হামা, পরপর সিরিয়ার শহর দখল বিদ্রোহীদের
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যালেসে ভাঙচুর
বাশার দামাস্কাস ছাড়ার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখা যায় সিরিয়ায়। দামাস্কাসের কিছু অঞ্চলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয় বলে অভিযোগ। বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যালেসে। বাশারের পরিবারের সদস্যদের ছবি-সহ ফ্রেম ভাঙচুর করা হয়। এর আগে শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশেও সরকারের পতনের সময়ে এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। এমনকি ‘আল জাজ়িরা’ জানিয়েছে, দামাস্কাসে ইতালির রাষ্ট্রদূতের বাসভবন থেকে তিনটি গাড়ি চুরি হয়ে গিয়েছে। এক দল সশস্ত্র মানুষ ইতালির রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে প্রবেশ করেছিলেন বলে দাবি সে দেশের বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনিও তাজানির। ইরানের দূতাবাসেও হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সিরিয়ায় ভারতীয়দের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন ভারতীয় সরকার
সিরিয়ার এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়েরা কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ দানা বাঁধতে শুরু করে। পরে কেন্দ্রীয় আধিকারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানায়, সিরিয়ায় ভারতীয়রা নিরাপদেই রয়েছেন। দূতাবাস থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সে দেশে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যোগাযোগ করছে দূতাবাস।
সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অভ্যুত্থানে আসাদের পতনের পর সে দেশে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সিরিয়ায় গত কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আসাদের পতন সেখানে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে মনে করছে অ্যামনেস্টি। সংস্থার মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ডের মতে, এই সময়ে ন্যায়বিচার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিশোধ নয়। কেউ আত্মসমর্পণ করতে চাইছেন বুঝতে পারলে, তাঁর উপর যাতে হামলা না করা হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
সিরিয়ায় পরিস্থিতি তপ্ত হতে পারে বলে আঁচ করে আগে থেকেই সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সতর্ক করে বিদেশ মন্ত্রক। গত সপ্তাহেই ওই পরামর্শাবলীতে সিরিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের বলা হয়, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনোর জন্য এবং সাবধানে চলাফেরা করার জন্য। প্রত্যেককে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়। সেই সঙ্গে সুযোগ থাকলে সিরিয়া ছাড়ার বার্তাও দেয় বিদেশ মন্ত্রক।