ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: কথায় আছে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে! বাংলার ঘরে ঘরে এমন কত মহিলারা এইভাবে নিঃশব্দে সংসার করে চলেছেন (Lakh Takar Lokkhi Labh)! শুধু রান্নাঘর সামলানো নয়, গোটা একটা পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখছেন এই সব সাহসিনীরা।
সাধ আছে সাধ্য নেই (Lakh Takar Lokkhi Labh)
কিন্তু অনেকেরই সাধ আছে, কিন্তু সাধ্য নেই! নানা রকমের বাধা বিপত্তি। তবু স্বপ্নের জাল বোনা থামাচ্ছেন না এইসব মহিলারা (Lakh Takar Lokkhi Labh)। দমবার পাত্রী নন কেউ এঁরা। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সমস্ত লড়াকু মহিলাদের সারা বাংলা থেকে খুঁজে খুঁজে নিয়ে এসে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিচ্ছে সান বাংলার নতুন গেম শো “লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ” (Lakh Takar Lokkhi Labh)।
সান বাংলার গেম শো (Lakh Takar Lokkhi Labh)
সান বাংলায় সম্প্রতি শুরু হয়েছে এই গেম শো (Lakh Takar Lokkhi Labh)। কিন্তু এই কয়েক দিনের মধ্যেই মহিলাদের ‘মুশকিল আসান’ হয়ে উঠেছে “লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ”। এই সমস্ত সাহসিনীরা এই শো-এ আসছেন, খেলছেন, জীবনযুদ্ধের কাহিনি শোনাচ্ছেন। এই শো সঞ্চালনা করছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: Jisshu Sengupta: অতীত ভুলতে চান, নতুন করে জীবন শুরু করছেন যীশু!
কী বলছেন সুদীপ্তা?
সুদীপ্তার কথায়, “এই শো-টার কনসেপ্টটাই এত ইউনিক, এই শো-এর মাধ্যমে আমি জীবনকে অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি। এখানে এমন সব মহিলারা খেলতে আসছেন, তাঁদের জীবনযাপন, লড়াই-এর গল্প শুনে আমার চোখ ভিজে যাচ্ছে। আমার-আপনার কাছে এই এক লাখ টাকাটা কত গুরুত্বপূর্ণ সেটা বলতে পারব না, কিন্তু এখানে যাঁরা খেলতে আসছেন, জিতেছেন এক লাখ টাকা, তাঁদের কাছে কিন্তু এই এক লাখ টাকাটা বিরাট ব্যাপার। স্বপ্নপূরণের চাবিকাঠি।”
আসছে বাংলার লক্ষ্মীরা
সমস্ত বাংলা থেকেই এই সব লক্ষ্মীরা খেলতে আসছেন এই শো-এ। এমনই এক লড়াকু লক্ষ্মী পুরুলিয়ার সুনীতা মাহাতো। উনি নিজে মহিলাদের নিয়ে একটি ছৌ-নাচের দল চালান। দলের নাম ‘মাতঙ্গিনী হাজরা মহিলা ছৌ-নৃত্য গোষ্ঠী’। কিন্তু যেহেতু ছৌ-নাচ মূলত পুরুষরাই করেন, তাই মহিলাদের নিয়ে এই দল তৈরি করতে প্রচুর বাধা পান সুনীতা। কিন্তু এক পা-ও পিছু হটেননি। সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে তোয়াক্কা না করে, গ্রামে ঘুরে ঘুরে মেয়েদের বুঝিয়ে নিয়ে এসে তাদের ছৌ-নাচ শিখিয়ে শেষমেষ একটা দল তৈরি করেছেন সুনীতা।
আরও পড়ুন: Dev: প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন দেব, ভক্তের
ছৌ নাচের দল
এই দল এখন সারা দেশেই শো করে। কিন্তু ছৌ-নাচের কদর ক্রমশ কমছে। এই সংষ্কৃতি ডুবন্ত।একটা গোটা দল চালানো খুব কষ্টকর। তাই সুনীতা বলেন, “লাখ টাকা পেলে দলটা আর একটু ভাল করে তৈরি করব। মুখোশ কিনব, ড্রেস কিনব, দলটা বাড়াব।” সুনীতা আরও জানান, তাঁর দুই মেয়ে। এই দুই মেয়েকেও তিনি এই দলে নিয়ে আসবেন। পরম্পরা না থাকলে ছৌ-নাচের এই দল একদিন হারিয়ে যাবে!
মামনি দাস
আরেক লক্ষ্মী হলেন মধ্যমগ্রামের মামনি দাস। ছোট থেকেই মামনি পরিশ্রম করতে ভালোবাসেন। কখনও ফুটপাতে বসে পেন বিক্রি করেন, আবার কখনও কাঁচের অ্যাকুরিয়াম তৈরি করেন। মামনি খুব রসিক প্রকৃতির মহিলা সব সময় তার মুখে একরাশ হাসি লেগেই থাকে। মেয়েকে ওকালতি পড়ানোর জন্য নিজের বাবা মার দেওয়া সমস্ত সোনার গয়না বন্ধক রেখে নিজের জন্য একটা অটো কেনেন। সকালে সংসারের কাজ সেরে অটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বিকেলে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর পর আবার মধ্যরাত পর্যন্ত কাঁচের অ্যাকুরিয়াম তৈরি করে হাটে বিক্রি করেন। এই ভাবেই ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে মামনির দিন কেটে যায়। মামনির ইচ্ছে, এক লাখ পেলে সোনার গয়না গুলো ছাড়িয়ে এনে মেয়েকে ওকালতি পড়াবেন।
স্বপ্নপূরণের জাল
এই ভাবেই প্রতিদিন স্বপ্নপূরণের জাল বুনে চলেছে সান বাংলার “লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ”। এই খেলার আরেক বিশেষত্ব হল, চারটে রাউন্ডে খেলা হয়। প্রতি রাউন্ডেই টাকা জেতার সুযোগ। লাখ টাকা কেউ না জিতলেও খালি হাতে কেউ বাড়ি যাবেন না এই শো থেকে। সন্ধ্যে ছটা বাজলেই বাংলার ঘরের লক্ষ্মীদের এখন চোখ তাই ‘লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ”-এ।