বকেয়া DA না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ নয়, হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মচারীদের

বকেয়া ডিএ না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ নয়। নবান্ন ও নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দিল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ

বকেয়া DA না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ নয়, হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মচারীদের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বকেয়া ডিএ না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই নিয়ে মঙ্গলবারই নবান্ন ও নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। মঙ্গলবার অবশ্য সরকারি ছুটি থাকায় সেই চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে ডিএ আদায়ের জন্য এবার সরকারের ওপর রাজনৈতিক ভাবেও চাপ সৃষ্টি করছে সরকারি কর্মীরা।

বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারে সরকারি কর্মীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অনশন আন্দোলনের বুধবার ষষ্ঠ দিন। বুধবারের মধ্যে বকেয়া না মেটানো হলে পঞ্চায়েত ভোটে কাজ না করা এবং লাগাতার কর্মবিরতির চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারি কর্মীরা। ভোটের কাজ না করার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র তফাত এখন ৩৫ শতাংশ। দিন দিন ফারাক বাড়ছে। অথচ বকেয়া দিচ্ছে না রাজ্য। ডিএ নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজাও। এই পরিস্থিতিতে আজকের মধ্যে রাজ্য সরকারি বকেয়া ডিএ মেটানোর ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার। অনশন আন্দোলনের ৬ দিন আর সরকারি কর্মীদের আন্দোলন আজ পড়ল ২০ দিনে। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে কোনও ধরনের বার্তা আসেনি। 

এদিকে বকেয়া ডিএ না পেলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা । ইতিমধ্যে অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দুজন। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি। এক সরকারি কর্মীর বক্তব্য, ''মন্ত্রীরা অনেক সময়েই অনেক কথা বলছেন, শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু আমরা কর্মচারীরা বঞ্চনার শিকার, তা যদি না মেটানো হয়, তাহলে আমরা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাব। প্রতি মাসে আমরা প্রচুর টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তার জন্য আন্দোলন চলবে।'' আরেক সরকারি কর্মী বলেন, ''যদি সরকারের টাকাই না থাকে, তাহলে একটার পর একটা প্রকল্প করছি কীভাবে। বকেয়া যেভাবে পড়ে রয়েছে, তাহলে এই মঞ্চে এসে সরকারের তরফে কোনও সমাধানসূত্র বার করা হোক।''

 প্রসঙ্গত, বকেয়া ডিএ না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজ নয়। নবান্ন ও নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দিল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে গিয়ে চিঠি দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের এই সংগঠন। জানা গিয়েছে, সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চের মূলত দুটি দাবি। এক, কেন্দ্রীয় সরকারি হারে ডিএ দিতে হবে। রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রের তুলনায় অনেকটা কম হারে ডিএ পেয়ে থাকেন। তাঁরা বলছেন, রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৪২ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। সরকারি কর্মী সংগঠনের দ্বিতীয় দাবি হল, শীঘ্রই রাজ্য সরকারের সব শূন্য পদে নিয়োগ করতে হবে। এই দুই শর্ত পূরণ না হলে তাঁরা ভোটের ডিউটিতে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।

 আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের স্পষ্ট বক্তব্য, মহার্ঘ ভাতার দাবি না মেটানো হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সরকারি কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক। রাজ্য সরকারকে তাঁরা দু’দিন সময় দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংগ্রামী যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক। দু’দিনের মধ্যে তাঁদের বকেয়া ডিএ না মেটানো হলে লাগাতার কর্মসূচির দিন ঘোষণা করবেন। এদিকে আন্দোলনকারীদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, টানা অনশনে বসে একাধিক সরকারি কর্মচারি অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। 

প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শহিদ মিনারে সরকারি কর্মচারিদের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথমঞ্চ ধরনায় বসেছে। গত কয়েকদিন ধরে সেখানেই আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন তিন সরকারি কর্মী। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লেন ২ জন সরকারি কর্মী। দুই অসুস্থ অনশনকারীকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।