কান ধরে ওঠবোস করানোর 'শাস্তি', স্টাফরুমে ঢুকে শিক্ষককের উপর চড়াও অভিভাবকরা

তৃতীয় পিরিয়ডের পর স্কুল থেকে বেরিয়ে যায় ওই ছাত্র। আর তারপরই ঐ ছাত্র তার মামাবাড়ির লোকজন ডেকে এনে দলবল নিয়ে ওই শিক্ষকের উপর চড়াও হয়।

কান ধরে ওঠবোস করানোর 'শাস্তি', স্টাফরুমে ঢুকে শিক্ষককের উপর চড়াও অভিভাবকরা
পড়ুয়ার অভিভাবকদের হাতে আক্রান্ত শিক্ষক (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ক্লাসে অমনযোগী ছিল ছাত্র। শাস্তিস্বরূপ ওই ছাত্রকে কান ধরে ওঠবোস করিয়েছিলেন ইংরেজির শিক্ষক। আর তারপর শিক্ষক মহাশয়কে সবক শেখাতে ওই পড়ুয়ার অভিভাবকরা যা করলেন তাতে ছিৎকার পড়ে গিয়েছে শিক্ষামহলে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দশম শ্রেণির 'খ' বিভাগে ইংরেজি ক্লাস নিতে গিয়েছিলেন শিক্ষক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। অভিযোগ, এক ছাত্র ক্লাস চলাকালীন গণ্ডগোল করতে থাকে। এতে অন্যান্য ছাত্রদেরও অসুবিধা হচ্ছিল। তারা শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানায়। এরপর শাস্তি দিতে ওই ইংরেজি শিক্ষক তাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। কিন্তু সে বাইরে দাঁড়িয়েছিল। শেষে প্রসেনজিৎবাবু তাকে ভিতরে ডেকে কানমলা দিয়ে ওঠবোস করতে বলেন। শিক্ষকের কথা মেনে ছেলেটি ওঠবোস করে।

জানা গিয়েছে, তৃতীয় পিরিয়ডের পর স্কুল থেকে বেরিয়ে যায় ওই ছাত্র। আর তারপরই ঐ ছাত্র তার মামাবাড়ির লোকজন ডেকে এনে দলবল নিয়ে ওই শিক্ষকের উপর চড়াও হয়। স্কুলের স্টাফ রুমে ঢুকে  শিক্ষককেই মারধর ছাত্রের অভিভাবকদের। এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে, শ্যামপুর থানার আমড়দহ অঞ্চলের নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠে। অভিযোগ, অভিভাবক সহ যে তিনজন এসেছিলেন মাস্টাররের উপর চড়াও হতে তাদের অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল।

শুধু একজন শিক্ষককে নয়, মারধরের প্রতিবাদ করায় আরও বেশ কিছু শিক্ষকেও মারধর করে ওই অভিভাবক। এমনটাই আভিযোগ। এমনকি রেয়াত করেননি স্কুলের মহিলা শিক্ষকদেরও। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ শ্যামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ৪ জন অভিযুক্তের মধ্যে ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত পলাতক। এমনই এক দৃশ্য CCTV ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। স্বভাবত স্টাফ রুমে থাকা অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা হতবাক ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। গোটা ঘটনায়  ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রাক্তন ছাত্ররা। কীভাবে ছাত্রের অভিভাবক স্কুলে ঢুকে এধরনের কাজকর্ম করতে পারে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক মহল এবং অভিভাবকরা।