'দুর্গা' বানান বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন চাকরিপ্রার্থী, ভর্ৎসনা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

গত ১৭ জুলাই ওই চাকরিপ্রার্থীর আবেদন শোনার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁকে তাঁর প্রাপ্য নম্বর দিতে হবে। পাশাপাশি চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ এবং অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট নতুন করে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে।

'দুর্গা' বানান বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন চাকরিপ্রার্থী, ভর্ৎসনা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ভরা আদালতেই ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অনুর্ত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীর পরীক্ষা নিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ভুল বানান বলায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ওই আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীর আবেদন খারিজ করে দিলেন বিচারপতি। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন ওই মহিলা চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু তিনি পাশ করতে পারেননি। আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তিনি দাবি করেন, পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল। সেই নম্বর পেলে, তিনি পাশ করে যেতেন।

গত ১৭ জুলাই ওই চাকরিপ্রার্থীর আবেদন শোনার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁকে তাঁর প্রাপ্য নম্বর দিতে হবে। পাশাপাশি চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ এবং অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট নতুন করে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। শুক্রবার সেই মামলারই আবার শুনানি ছিল। শুনানিতে বিচারপতিকে পর্ষদ জানায়, ওই চাকরিপ্রার্থী চাকরি পাওয়ার যোগ্য নয়। তারপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে ওই আবেদনকারীর মৌখিক পরীক্ষা নেন। ওই চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ এবং অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের ভিডিয়োগ্রাফিও দেখতে চান।

 ভিডিয়োয় দেখা যায় চাকরিপ্রার্থী ব্ল্যাক বোর্ডে লিখছেন, ‘আমরা চাষ করী আনন্দে।’ আবেদনকারীকে ‘করি’ বানানে 'ঈ' লিখতে দেখে অবাক হয়ে যান বিচারপতি। তারপর তাঁকে 'দুর্গা' বানান জিজ্ঞাসা করেন বিচারপতি। কিন্তু আবেদনকারী দুর্গা  বানানে 'দু' এর জায়গায় 'দূ' বলায় বিচারপতি আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীর উদ্দেশ্য বলেন, ''আপনি ভুল বানান বললেন। দুর্গা বানানে 'ঈ' হয় না। দুর্গা বানানে 'উ' হয়। 'করি' বানান ভুল লিখলেন কী করে? এই বানান জ্ঞান নিয়ে আপনি শিক্ষকতা করবেন!"

তার উত্তরে ওই মহিলা চাকরিপ্রার্থী বলেন,'আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। আর অনেকদিন আগে পড়েছিলাম, তাই ভুল করেছি।' বেশ বিরক্ত হয়ে তখন বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'তা হলে আমি তো বহু বছর আগে পড়েছি। এসব তো ক্লাস সিক্সে পড়েছি। আমার তো এখনও মনে আছে। আপনারাতো এই সে দিন পড়ে এলেন। এরই মধ্যে ভুলে গেলেন। আমি আর ভিডিও দেখতে চাই না। আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গিয়েছে। এই বানান না জানলে কী ভাবে শিক্ষক হবেন! 'করি' বানান ভুল লিখলেন কী করে? এই বিদ্যে নিয়ে আপনি স্কুলে যাবেন! যাবেন না। হয়তো আপনার থেকে কম যোগ্যতার কেউ চাকরি পেয়েছেন। হয়তো সেটা টাকার বিনিময়ে। কিন্তু আপনিও স্কুলে পড়ানোর যোগ্য নন। বোর্ড আপনাকে যে নম্বর দিয়েছে বা যে অ্যাসেসমেন্ট করেছে তা একদম সঠিক। আমি আপনার আবেদন খারিজ করতে বাধ্য হলাম।'