কলকাতায় ডুরান্ড ফেরাতে উদ্যোগী তিন প্রধান, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে অবশেষে মুখ খুলল তিন প্রধান

এমনকি সম্প্রতি কলকাতা লিগের ম্যাচে মহামেডান এবং ইস্ট বেঙ্গলের ফুটবলাররা ম্যাচের মাঝেই জার্সিতে উই ওয়ান্ট জাস্টিস লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছে। জানুন বিস্তারিত...

কলকাতায় ডুরান্ড ফেরাতে উদ্যোগী তিন প্রধান,  আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে অবশেষে মুখ খুলল তিন প্রধান
সাংবাদিক বৈঠকে তিন ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা।।

রিমিক মাঝি, কলকাতা: অবশেষে তিন প্রধানের বিলম্বিত বোধোদয়। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল কলকাতায় ফেরাতে যৌথ উদ্যোগ মোহনবাগান, ইস্ট বেঙ্গল ও মহমেডানের। সেইসঙ্গে আরজি করের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিও তুলল ময়দানের তিন বড় ক্লাব। তবে ডার্বি বাতিল নিয়ে পুলিশের কোর্টেই বল ঠেললেন তিন প্রধানের শীর্ষ কর্তারা।    

আরজি করের ঘটনায় উত্তাল শহর থেকে গোটা রাজ্য। নির্যাতিতার দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, আন্দোলনে ভাসছে কলকাতা। তার আঁচ পড়েছে ফুটবলেও। গত ১৮ আগস্ট যুবভারতীতে ডুরান্ড কাপের ডার্বি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে বাতিল করেছে পুলিশ। ডুরান্ডের কোর্য়াটার ফাইনাল সরেছে ভিন রাজ্যে। প্রতিবাদে গত রবিবার যুবভারতীর সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডানের সমর্থকরা। বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছিলেন অনেক বিক্ষোভকারী সমর্থক। কিন্তু ডার্বি বাতিল বা আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সমর্থকরা মাঠে নামলেও তিন ক্লাব মুখ না খোলায় ক্ষোভ তৈরি  হচ্ছিল সমর্থকদের অন্দরে। 

অবশেষে বিলম্বিত বোধদয়ে মুখ খুলল তিন প্রধান। মঙ্গলবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে যৌথভাবে ডার্বি বাতিলের প্রতিবাদ এবং আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন তিন প্রধানের কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের সচিব দেবাশীষ দত্ত, ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার ও সচিব রূপক সাহা এবং মহামেডান ক্লাবের সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে তিন প্রধানের কর্তারাই আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের কঠোর তম শাস্তি ও দ্রুত তদন্ত শেষের আর্জি জানালেন। সেই সঙ্গে ডুরান্ড কাপের সেমি ফাইনাল ও ফাইনাল কলকাতায় ফেরানোরও দাবি জানালেন তাঁরা। এই নিয়ে ডুরান্ড কমিটি এবং ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে সদর্থক ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলেই দাবি করলেন তিন প্রধানের শীর্ষ কর্তা। সেই সঙ্গে কেন এতদিন পর তিন ক্লাব একযোগে মুখ খুলল তারও ব্যাখ্যা দিলো কর্তারা। 

তবে রবিবার যুবভারতীতে বিক্ষোভে যে পরিমাণ পুলিশ ছিল তা দিয়ে ডার্বি আয়োজন করা সম্ভব হত কিনা! সেই প্রশ্নে গোটা দায়টাই পুলিশের ওপর চাপাল তিন ক্লাবই। তাদের বক্তব্য, পুলিশ মনে করেছে, এই পরিস্থিতিতে ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নয়, সেখানে তাই তাদের কিছু বলার ছিল না। তবে রবিবার বিক্ষোভকারী সমর্থকদের উপর পুলিশ লাঠি না চালিয়েও অন্য ভাবেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারত বলেও মনে করছে তিন ক্লাব। আরজি করের ঘটনায় এবং কলকাতা থেকে ফুটবলকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সকলেই প্রতিবাদ করছে। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা মেনে সমর্থকদের প্রতিবাদে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানাল তিন ক্লাব। শুধু তাই নয়, রবিবারের ঘটনায় যদি কোনও সমর্থক ক্লাবের থেকে যদি আইনি বা অন্য কোনও সহযোগিতা চাই তা তাঁরা করতে প্রস্তুত বলেও জানাল তিন ক্লাব। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Calcutta-High-Court-gives-conditional-permission-to-BJPs-rally-against-RG-tax-incident

 আরজি করের ঘটনায় জাস্টিস চেয়ে এবং প্রতিবাদে অনেক ফুটবলারই নিজেদের মত সরব হয়েছেন। এমনকি সম্প্রতি কলকাতা লিগের ম্যাচে মহামেডান এবং ইস্ট বেঙ্গলের ফুটবলাররা ম্যাচের মাঝেই জার্সিতে উই ওয়ান্ট জাস্টিস লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছে। মঙ্গলবার ডুরান্ড কলকাতায় ফেরাতে এবং আরজি করের ঘটনায় তিন ক্লাবের সুর এক থাকলেও মাঠে ফুটবলারদের প্রতিবাদে 
মতপার্থক্য দেখা গেল ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানের মধ্যে। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/West-Bengal-CM-Mamata-Banerjee-targets-to-BJP--CPIM-on-RG-Kar-Hospital-attack-Case

মহমেডান কর্তা ইস্তিয়াক আহমেদের দাবি, খেলার মাঠে খেলা হোক আর প্রতিবাদ হোক প্রতিবাদের জায়গায়। খেলার মাঠে ফুটবলারদের প্রতিবাদে সায় নেই বলেই স্পষ্ট জানালেন তিনি। উলটো দিকে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের মতে, প্রতিবাদ জানানোর স্বাধীনতা সকলের আছে। মাঠে খেলোয়াড়্দের প্রতিবাদ জানানোটা  তাঁদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এক্ষেত্রে কোনও খেলোয়াড়ই ক্লাবের থেকে অনুমতি নেয়নি। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং ডার্বি বাতিলের প্রতিবাদে ক্লাব আলাদা করে পথে নামবে কি না তার উত্তর দিতে পারলেন না তিন প্রধানের কর্তারাই।