Sundarbans News: মাতলা-গোসাবা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল, দু'টি নদী পেরিয়ে আদৌ পৌঁছবে কি রেললাইন!

২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সুন্দরবনের ভৌগলিক মানচিত্রকে জুড়তে রেলপথ জায়গা পায়। তার জন্য সেই সময় পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

Sundarbans News: মাতলা-গোসাবা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল, দু'টি নদী পেরিয়ে আদৌ পৌঁছবে কি রেললাইন!
নিজস্ব চিত্র

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় এখনও অধরা রেলপথের স্বপ্ন। প্রস্তাবের পর একযুগ কেটে গেলেও এখনও হয়নি রেলপথ। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ১৪'টা বছর। এখনও রেলপথ পাইনি সুন্দরবন। আর এই না পাওয়ার ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন Sundarbans-এর প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষগুলো। 

জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে আজ থেকে প্রায় বছর ১৫ আগে হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেললাইন পাতার জন্য এলাকায় মাপজোকও শুরু হয়েছিল। আশায় বুধ বেঁধেছিলেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন। কিন্তু তারপরে এত বছরে কাজ এগোয়নি। সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু রেলপথ তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণে সাহায্য করার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সেই চিঠিতে রয়েছে হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জ রেললাইনের প্রসঙ্গও। রেললাইন তৈরির সম্ভাবনা আছে বলে ফের মনে করছেন হিঙ্গলগঞ্জের বহু মানুষ। তবে দু’টি নদী পেরিয়ে আদৌ এই পথে রেলপথ নির্মাণ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সুন্দরবনের ভৌগলিক মানচিত্রকে জুড়তে রেলপথ জায়গা পায়। তার জন্য সেই সময় পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ ১৭.৭ কিলোমিটার। প্রথম পর্যায়ে সেই সময় জমির মাপযোগ শুরু হয়। জমি দাতারাও জমি দিতে ইচ্ছুক ছিল। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। মাতলা, গোসাবা নদী দিয়ে গড়িয়েছে বহু জল। কিন্তু আজও সেই রেলপথ তৈরির কাজ তিমিরেই। ২০১২ সালে রেলমন্ত্রী মুকুল রায় হাসনাবাদ থেকে হিঙ্গলগঞ্জ পর্যন্ত ১৭.৭ কিলোমিটার রেলপথের জন্য জমি বরাদ্দ করেছিলেন।  ২০০৯ সালের পর সময় মাপযোগের কাজ হয়ে যাওয়ার পর প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা তারপর ২০২২ সালে ২৬০ পয়েন্ট রেলপথের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর কিছুই হয়নি! মিলেছে শুধুই প্রতিশ্রুতি আর প্রত্যাশা! ক্ষোভ মিশিয়ে এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।  

বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। আর তাই তো এতবছর পর ফের রেলের নজরে পড়েছে বাংলায় আটকে থাকা রেল প্রকল্পের কাজ। দীর্ঘদিন আটকে থাকা একাধিক রেললাইন তৈরির কাজ নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং বিজেপি নেতারা। বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক তুলসী কুমার দাস বলেন, ''২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এখানে রেলের বাজেট তৈরি হয়েছিল। তারপর ২০১২ সালে রেলমন্ত্রী মুকুল রায় সেই সময় জমির মাপ যোগ হয়েছিল। তারপর থেকে অধরাই থেকে গেল সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষদের কাছে রেলপথের স্বপ্ন। হাসনাবাদের ইছামতি নদী ও কালিন্দী নদী ব্রিজ হওয়ার পরও আজও রেলপথ পাইনি সুন্দরবনের মানুষ। তাই একরাশ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এইসব প্রান্তিক মানুষেরা।''

২০২২ সালে রেল বাজেটে হয়েছে নতুন করে আর বরাদ্দ হয়নি। হাসনাবাদ থেকে সামশের নগর পর্যন্ত রেলপথ অধরাই রয়েছে সুন্দরবন মানুষের কাছে। যতই রাজ্যের রেলপথ সুগম করার জন্য কেন্দ্র, রেলমন্ত্রক কথা বলুক না কেন। এখনও তার কোনও কাজই শুরু হয়নি বাংলায়। বসিরহাটে মহকুমার আইএনটিটিইউসির সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, ''সামনে লোকসভা ভোট। প্রান্তিক মানুষকে বোকা বানানোর জন্য রেলের কথা বলা হচ্ছে। যা করা হয়েছিল ২০০৯ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকাকালীন। তারপর ২০২২ সালে সেই বরাদ্দ। রেলের কাজ শুরু হয়নি গত সাড়ে ৯ বছরে সুন্দরবনের মানুষের কথা ভাবিনি কেন্দ্র সরকার। সামনে লোকসভা ভোট এটা গেমিং ছাড়া আর কিছুই নয়। তাহলে তারা নতুন আরো বেশি বাজেট করে কাজ করার সদ ইচ্ছা দেখাতো।  ২০২৪ সালে জোটের সরকার আসলে আমরা আশাবাদী রেলের কাজ সম্পূর্ণ হবে।''