ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সংবাদমাধ্যমের কাছে কুমার জাল আধার কার্ড (Aadhaar identity statement) পরীক্ষা করার জন্য UIDAI-এর প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে আধার কার্ডগুলিতে একটি QR কোডের মাধ্যমে সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।
আধার কার্ড নিয়ে বিতর্কের মাঝেই মুখ খুললেন ইউআইডিএআই সিইও (Aadhaar identity statement)
বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR) প্রক্রিয়ায় আধার কার্ডকে গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্র হিসেবে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন বিতর্ক চলছে (Aadhaar identity statement)। এর মাঝেই ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI)-এর সিইও ভবনেশ কুমার জানালেন, “আধার কখনও প্রথম পরিচয় নয়।” সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভবনেশ কুমার বলেন, আধার কার্ডে একটি কিউআর কোড থাকে, যা এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। UIDAI নিজেই একটি আধার QR স্ক্যানার অ্যাপ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে কার্ডে থাকা তথ্য যাচাই করা যায়। যদি কেউ নকল আধার কার্ড তৈরি করে, তাহলে সেই কার্ড সহজেই শনাক্ত করা যাবে।
নকল আধার রোধে প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ (Aadhaar identity statement)
কুমার জানান (Aadhaar identity statement), অনেকে ফটোশপ বা প্রিন্টেড টেমপ্লেট ব্যবহার করে নকল আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা করে। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, এসব “আসলে আধার কার্ড নয়।” UIDAI প্রধান আরও জানান, আধার নম্বরধারীর সম্মতির ভিত্তিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচয় শেয়ার করার একটি নতুন অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই অ্যাপের ডেমো দেখানো হয়েছে এবং সেটি প্রায় প্রস্তুতির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে। এই নতুন অ্যাপের মাধ্যমে মানুষকে আর আধার কার্ডের ফিজিক্যাল কপি দিতে হবে না। ব্যবহারকারীরা চাইলে পুরো তথ্য বা মাস্কড ফরম্যাটে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্য শেয়ার করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা ও আরজেডির আপত্তি (Aadhaar identity statement)
এদিকে নির্বাচন কমিশন রবিবার জানিয়েছে, বিহারে ভোটার তালিকার SIR প্রক্রিয়া “স্বাভাবিকভাবে চলছে” এবং নির্দেশিকায় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। কমিশনের ২৪ জুনের নির্দেশ অনুযায়ী, বিহারে প্রায় ৮ কোটির মতো ভোটারকে এই প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে, যাতে অযোগ্য নাম বাদ দেওয়া যায় এবং যোগ্য নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এই নিয়ে রাজনীতির পারদ চড়েছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব দাবি করেছেন, বিহারে বিধানসভা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই সংশোধন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হোক।
আরও পড়ুন: Labor Law Amendment: শ্রম আইন সংস্কার বহু রাজ্যে, কী বলছে নতুন নিয়ম?
তাঁর বক্তব্য, আধার ও এমজিএনআরইজিএ জব কার্ড, যা বিহারে বহু মানুষের কাছে আছে, সেগুলিকে পরিচয়পত্র হিসেবে না মানায় ভোটাররা সমস্যায় পড়ছেন। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের পর তৈরি হওয়া আধার, যেটিকে নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি-র সঙ্গে যুক্ত করতে চায়, সেটাই এখন গ্রহণযোগ্য নয়, এটা খুবই বিস্ময়কর।”
স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন
তেজস্বী যাদব আরও দাবি করেন, প্রতিদিন কোন বিধানসভা কেন্দ্রের কতজন ভোটার এই প্রক্রিয়ার আওতায় আসছেন, সেই তথ্য প্রকাশ করা হোক। একই সঙ্গে যাঁরা বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) সাহায্য করছেন, সেই স্বেচ্ছাসেবকদের পরিচয় ও বাচাইয়ের মাপকাঠিও জানানো হোক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “২০০৩ সালের মতো গোটা দেশে নয়, শুধু বিহারেই কেন এই সংশোধন চলছে? এই প্রক্রিয়া নির্বাচন পর্যন্ত বন্ধ রাখা উচিত। কমিশনের উচিত বুথ লেভেল অফিসারদের সঙ্গে কথা বলা, যাঁরা তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ভোটারদের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন।”
আরও পড়ুন: Jaguar Fighter Jet Crash : রাজস্থানে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, ভেঙে পড়ল IAF-এর Jaguar যুদ্ধবিমান!
কোন কোন পরিচয়পত্র গ্রহণযোগ্য, আধার বাদ
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মোট ১১টি নথি SIR প্রক্রিয়ায় পরিচয় হিসেবে গ্রহণযোগ্য। এর মধ্যে রয়েছে সরকার/পিএসইউ কর্মীদের পরিচয় বা পেনশন কার্ড, ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগের সরকার প্রদত্ত সার্টিফিকেট, জন্ম সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, জাতি ও বাসস্থান সংক্রান্ত নথি, এনআরসি দলিল, বনাধিকার সার্টিফিকেট, পরিবার রেজিস্টার, জমি বা বাড়ি বরাদ্দ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট ইত্যাদি। এই তালিকায় উল্লেখযোগ্যভাবে আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সকে রাখা হয়নি, যদিও এগুলো দেশজুড়ে পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই এখন রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে। UIDAI ও নির্বাচন কমিশনের অবস্থান ও ব্যাখ্যা সত্ত্বেও বিরোধী দলগুলি সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।