রূপম রায়, নদীয়া: বৃহৎ বঙ্গদেশের যশোর সম্পন্ন ব্যবসায়ী ছিলেন রামসুখ দে। বস্ত্র ব্যবসায়ী রামসুখ দে ব্যবসার উন্নতির জন্য চলে আসেন রানাঘাটে। পারিবারিক কারণে রানাঘাটে চূর্ণী নদীর তীরে আইসতলায় বসবাস শুরু করলেও পরবর্তী বছরে ভয়াবহ বন্যায় বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন তিনি উচুঁ জায়গার সন্ধান করতে থাকেন বসবাসের জন্য। অবশেষে চূর্ণী নদীর পূর্বপাড়ে মন্দির সহ অট্টালিকা নির্মাণ করেন। তখন থেকেই তাঁর বাড়িতে রামসুখ দে শুরু করেন দুর্গাপুজো। সেই দুর্গাপুজোই এখন দে চৌধুরী বাড়ির ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো।
আনুমানিক ১৭৪৪ সাল। ধর্মপরায়ন রামসুখ দে তাঁর বাড়িতে সমস্ত উপাচার মেনে শুরু করেন দুর্গাপুজো। পরবর্তী কালে পারিবারিক শ্রী বৃদ্ধির কারণে দে চৌধুরী পাড়া নামে পরিচিত পায় তার বসত পাড়া। দে চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো রানাঘাটের এক প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পুজো। পুজোর সময়ে দরিদ্রদের দান করা ছিল তার অন্যতম উদারতা।
দে চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো ইতিবৃত্ত:
এইবছর দে চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো পদার্পণ করল ২৮০ বছরে। এই বাড়ির সনাতন রীতি বেশ প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী। রানাঘাটের দে চৌধুরী বাড়িতে মা দুর্গাকে মেয়ে রূপে পুজো করা হয়। মেয়ের বিয়ে হয়েগেলে বাপের বাড়িতে আসলে যেমন আনন্দ হয় তেমনই মা দুর্গাকে মেয়ের মতন করে দেখা হয়। পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। প্রতিপদ থেকে ঘটে এবং বোধনের পর প্রতিমাতে একটানা চলতে থাকে পুজো। নবমী অবধি অনির্বান ভাবে জ্বলতে থাকে প্রদীপ। হোমও জ্বলে প্রতিপদ থেকে একটানা নবমী অবধি। বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ার জন্য দেওয়া হয়না কোনও রান্না করা ভোগ। কাঁচা সামগ্রী দিয়েই পূজিত হন রানাঘাটের দে চৌধুরী বাড়ির মা দুর্গা।