ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ রাজ্য। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদনে রাজ্যের মামলা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলল সিবিআই। আরজি কর-কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালতের রায়কে রাজ্য চ্যালেঞ্জ করতে পারে কিনা এবং তার গ্রহণ যোগ্যতা নিয়ে বুধবার শুনানিতে প্রশ্ন তুলল সিবিআই। রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ে আগামী সোমবার ফের শুনানি হবে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে। ততক্ষণ এই মামলায় হাইকোর্ট কোনও নির্দেশ দেবে না। তাই এদিন নিম্ন আদালতের রায়ে কোনও হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট।
মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন সিবিআইয়ের (Calcutta High Court)
শিয়ালদহ আদালতের রায়কে রাজ্যের চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে এদিন শুনানিতে আপত্তি জানায় সিবিআই (CBI)। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে কীভাবে রাজ্য আবেদন জানায়, সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিবিআই আইনজীবী তথা ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার। নির্যাতিতার পরিবার বা সিবিআই কিংবা দোষী হাইকোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কী ভাবে এই আবেদন করতে পারে, এই প্রশ্ন তোলেন তিনি।(Calcutta High Court) উদাহরণ হিসেবে লালু প্রসাদ যাদবের মামলার প্রসঙ্গও টেনে আনেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
আরও পড়ুন: RG Kar Case: আজ সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি, সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার পর প্রথম
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: আরজি কর-মামলার রায়ে স্তম্ভিত মুখ্যমন্ত্রী, ‘অপরাধের সঙ্গে আপস নয়’ বার্তা মমতার
সিবিআইয়ের এই দাবির বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়। লালুপ্রসাদের মামলার সঙ্গে এই মামলার তুলনা টানা অযৌক্তিক বলে আদালতে পাল্টা দাবি করেন তাঁরা। রাজ্যের বক্তব্য, লালুর ওই মামলার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) সব মামলা সিবিআইকে তদন্ত করতে দিয়েছিল। রাজ্যের আইনজীবীরা জানান, সিআরপিসি ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারা অনুসারে রাজ্য সরকার আবেদন করতেই পারে।
বিচারপতি বসাক রাজ্যের কাছে জানতে চান পরিবারকে এই মামলার বিষয়ে জানানো হয়েছে কিনা। বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ, আসামী মুক্তিপ্রাপ্ত হলে, আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কেউ উচ্চ আদালতে আসতেই পারেন। কিন্তু যখন নিম্ন আদালতে সাজা ঘোষণা হচ্ছে, আইনের ব্যাখ্যায়, তার একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। রাজ্য কীভাবে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) আসতে পারে, তার এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তখন সালমান খানের হিট অ্যান্ড রান মামলার প্রসঙ্গও উঠে আসে।
আরও পড়ুন: RG Kar Case: গত পাঁচ মাসে পাঁচটি মামলা বিরলের মধ্যে বিরলতম! আর জি কর কেন নয়?
পাশাপাশি এদিন বিচারপতি নিম্ন আদালতের রায়ের কপি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। রাজ্য সরকার কি এই রায়ের কপি পেতে পারে, সেই নিয়েও প্রশ্ন ওঠে এদিনের শুনানিতে। কারণ, শিয়ালদহ আদালতের (Sealdah Court) বিচারপতি অনির্বাণ দাস রাজ্যকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিল, যাঁরা এই মামলার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদেরকে ছাড়া সার্টিফায়েড কপি নিয়ে কাউকে দেওয়া যাবে না। নিয়ম হচ্ছে, পরবর্তীকালে কোনও মামলার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কেউ আদালতে গেলে, মামলার সঙ্গে জড়িত সকলকেই সেই রায়ের কপি নিয়ে আসতে হয়। সেটা সাধারণভাবে আবেদন করে পেতে হয়।
এদিন সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি দেবাংশু বসাক নিম্ন আদালতের সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy) আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়কে খারিজ করেননি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, যদি মামলাটি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়, তবেই তিনি নিম্ন আদালতকে রায়ের সার্টিফায়েড কপি দিতে বলবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত হাইকোর্ট কোনও নির্দেশ দেবে না। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিনই রাজ্যকে প্রমাণ করতে হবে বা মামলাটির গ্রহণযোগ্যতার স্বপক্ষে যথাযথ যুক্তি দিতে হবে।