ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: “আমরা বিশ্বাস করি যে কারও অন্যায়ের মুখোমুখি হওয়া উচিত নয়… কিন্তু যারা দোষী তাদের শাস্তি পেতেই হবে… আমরা কারও বিরুদ্ধে নই… কিন্তু আমরা কাউকে সমর্থনও করি না,” (Ajit Pawar Big Statement) বলেন অজিত পাওয়ার।
“দোষী যেন ছাড়া না পায়, নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়” — অজিত পাওয়ার (Ajit Pawar Big Statement)
২০০৬ সালের মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আজ মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার বলেন (Ajit Pawar Big Statement), “এই মামলায় কিছু নির্দোষ মানুষও ফেঁসে গিয়েছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “কোনো নির্দোষ যেন শাস্তি না পান, আবার কোনো দোষীও যেন ছাড়া না পান।” এই মন্তব্য ঘিরেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জোর চর্চা, কারণ রাজ্য সরকার এই মামলায় বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে ১২ জন অভিযুক্তকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়: হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, তবে মুক্তিতে বাধা নেই (Ajit Pawar Big Statement)
আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় যে, বম্বে হাইকোর্টের রায়কে মামলার দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য করা যাবে না (Ajit Pawar Big Statement), বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন ও সংগঠিত অপরাধ দমন আইন (MCOCA)-এর ক্ষেত্রে। তবে শীর্ষ আদালত অভিযুক্তদের মুক্তিতে কোনো বাধা দেয়নি। রায়ের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অজিত পাওয়ার বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের আদেশ নিয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। কিছু নির্দোষ মানুষও এই মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন… আমরা বিশ্বাস করি, কারও সঙ্গেই অন্যায় হওয়া উচিত নয়… আবার যারা অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার… আমরা কারও বিরুদ্ধে নই, কিন্তু কাউকে অন্ধভাবে সমর্থনও করি না।”
আরও পড়ুন: Ahmedabad Accident: একসঙ্গে সবাই অসুস্থ! আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার পর ছুটি নিয়েছিলেন ১১২ পাইলট
সরকার আপিল করবে, বললেন পাওয়ার (Ajit Pawar Big Statement)
অজিত পাওয়ার আরও জানান, “সরকার বম্বে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আমরা সুপ্রিম কোর্টে দক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করব এবং হাইকোর্টের বিচারপ্রক্রিয়ায় যে ত্রুটি রয়েছে, তা তুলে ধরব।” তবে উপমুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে সরকার তার অবস্থান থেকে কিছুটা হলেও সরে এসেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। নির্বাচনের মুখে থাকা অর্থবহ বৃহন্মুম্বই পৌর নিগম ভোটের আগে এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
ভাষা বিতর্কেও ব্যতিক্রমী মত, বলছেন রাজনীতিবিদরা
সম্প্রতি ভাষা বিতর্ক নিয়েও অজিত পাওয়ার মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসেন। তিনি বলেন, “আপনি যেই রাজ্যে থাকেন, সেই রাজ্যের ভাষার প্রতি সম্মান থাকা উচিত। মহারাষ্ট্র থেকে কাশ্মীর—সবার নিজের মাতৃভাষার প্রতি গর্ব থাকা উচিত। তবে এখন ভাষার নামে যা চলছে তা ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন, “যারা মহারাষ্ট্রে থাকেন কিন্তু মারাঠি জানেন না, তারা যদি নম্রভাবে বলেন ‘আমরা মারাঠি জানি না, আমরা শিখছি’, তাহলেই সমস্যা থাকবে না।”
আরও পড়ুন: Rape: ১৯৮৮ সালে অভিযুক্ত কিশোর! নাবালিকা ধর্ষণে ৫৩ বছর বয়সে ৩ বছরের সাজা
বিস্ফোরণ মামলা: ১২ জনের সাজা বাতিল করেছিল হাইকোর্ট
২০০৬ সালের মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় বিশেষ আদালত ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন মারা যান। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন একজন প্রাক্তন কল সেন্টার কর্মী, একজন ইউনানি ওষুধ বিক্রেতা, একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, একজন চাবি তৈরির কারিগর এবং একজন মুরগি বিক্রেতা। অনেকের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন সিমি (SIMI)-র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। অভিযোগ ছিল, তাঁরা পাকিস্তানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিদের লজিস্টিক সহায়তা দিয়েছেন।
বম্বে হাইকোর্ট রায় দিয়ে বলেছিল, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা মূলত জোর করে আদায় করা স্বীকারোক্তি এবং অবিশ্বস্ত সাক্ষীর উপর নির্ভর করে গঠিত। আদালত আরও বলেছিল, মামলায় উপস্থাপিত বস্তুগত প্রমাণ যেমন বিস্ফোরক ও অন্যান্য উদ্ধার হওয়া সামগ্রী ‘পাচারের’ ছিল এবং তাই তা গ্রহণযোগ্য নয়।