ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshaya Tritiya 2025) দিনটি পরশুরাম জয়ন্তী হিসেবেও পালন করা হয়। এই দিনে শ্রীবিষ্ণু পরশুরাম রূপে জন্মগ্রহণ করেন। পুরাণ অনুসারে পিতা জমদগ্নির নির্দেশে নিজের মা ও চার ভাইকে হত্যা করেছিলেন তিনি। পরশুরামের বাবা ছিলেন সপ্তর্ষির অন্যতম মহাঋষি জমদগ্নি এবং মা ছিলেন রেনুকা। ব্রাহ্মণ ঘরে জন্ম হলেও তাঁর মধ্যে ছিল ক্ষত্রিয়ের তেজ। ১৭ বার এই বিশ্বকে তিনি নিঃক্ষত্রিয় করেছিলেন। তবে বিষ্ণুর অন্যতম অবতার পরশুরামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাতৃহত্যার পাপ। সেই পাপে তাঁর হাতে কুঠার আটকে যায়। আজ পরশুরাম জয়ন্তীর আগে জেনে নেওয়া যাক পুরাণের সেই কাহিনি।
যোগবলে বিষয়টি জেনে প্রচণ্ড রুষ্ট হন (Akshaya Tritiya 2025)
জমদগ্নি ও রেনুকার পাঁচ পুত্রের মধ্যে পরশুরাম ছিলেন সবচেয়ে ছোট (Akshaya Tritiya 2025)। একদিন রেনুকা জল আনতে গঙ্গাতীরে যান। সেখানে গন্ধর্বরাজকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জলবিহার করতে দেখেন তিনি ৷ এটি দেখতে দেখতে রেনুকা এতটাই বিভোর হয়ে যান যে ও দিকে ঋষি জমদগ্নির যজ্ঞের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, তাও বিস্মৃত হয়ে পড়েন৷ কিছু পরে হুঁশ ফিরলে তিনি তাড়াতাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ঋষি যোগবলে বিষয়টি জেনে প্রচণ্ড রুষ্ট হন। তখন প্রথমে নিজের বড় ছেলেকে ডেকে মাকে বধ করার আদেশ দেন জমদগ্নি৷
হত্যা করতে পরশুরামকে নির্দেশ (Akshaya Tritiya 2025)
বাবার কথায় মাকে হত্যা করতে রাজি হননি তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র (Akshaya Tritiya 2025)। এর পর এক এক করে বাকি ছেলেদেরও ডেকে একই নির্দেশ দেন জমদগ্নি। কিন্তু তাঁরা প্রত্য়েকেই মাতৃহত্যা করতে অস্বীকার করেন। শেষে কনিষ্ঠ পুত্র পরশুরামকে ডেকে মাকে বধ করার কথা বলেন তিনি। বাবার নির্দেশ মান্য করে পরশুরাম তখন কুঠার দিয়ে মা রেনুকার গলা কেটে ফেলেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে এরপর চার ছেলেকেও হত্যা করতে পরশুরামকে নির্দেশ দেন জমদগ্নি। একে একে নিজের চার দাদাকেও বধ করেন পরশুরাম।

আরও পড়ুন: Akshaya Tritiya 2025: জেনে নিন অক্ষয় তৃতীয়ার দিন কোন রাশির জাতকের কী কেনা শুভ
মাতৃহত্যার পাপে কুঠার আটকে যায়
কনিষ্ঠ পুত্রের প্রতি প্রসন্ন হয়ে জমদগ্নি তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বলেন। সেই বরে নিজের মা ও ভাইদের প্রাণ ফিরিয়ে আনেন তিনি। মা ও ভাইদের প্রাণ ফিরিয়ে আনলেও মাতৃহত্যার পাপে কুঠার পরশুরামের হাতে আটকে যায়। কোনও ভাবে কুঠার হাত থেকে নামাতে না পেরে বাবার কাছে এর উপায় জানতে চান। জমদগ্নি বলেন যে মাতৃহত্যার পাপ একমাত্র কোনও তীর্থস্থানের জলের স্পর্শেই মুছতে পারে। বাবার কথামতো নানা তীর্থে ঘুরতে ঘুরতে ব্রহ্মকুণ্ডে উপস্থিত হন পরশুরাম। সেখানেই ব্রহ্মকুণ্ডের জলের স্পর্শে তাঁর হাত থেকে কুঠার পরে যায়।