প্রশ্নে নেই নিজের ভাষা, প্রশ্নের মুখে ১৬ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ

সাঁওতালী মাধ্যামের ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন এল বাংলা ও ইংরাজীতে৷ যারফলে পরীক্ষা না দিয়ে খাতা জমা দিয়ে বিডিও অফিসে গিয়ে ধর্নাতে বসেন পরীক্ষার্থীরা৷ ঘটনাস্থলে হাজির হন আদিবাসী নেতারাও

প্রশ্নে নেই  নিজের ভাষা,  প্রশ্নের মুখে ১৬  উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: পরীক্ষা ছিল পরিবেশবিদ্যার। সবাই পরীক্ষা দিলেও পরীক্ষা দেওয়া হল না মোট ১৬ জন পরীক্ষার্থীর। সময়মতো পরীক্ষার হলে গিয়েও শেষপর্যন্ত দেওয়া হয়নি জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পরিবেশবিদ্যার পরীক্ষা ছিল। প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়। আর এই ভাষাগত সমস্যার জেরে বিপাকে পড়েন মোট ১৬ জন পরীক্ষা। কারণ, তাদের সাঁওতাল ভাষায় পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পর্ষদের ভুলে তাদের কাছে পৌঁছয়নি কোনও সাঁওতালি ভাষায় প্রশ্নপত্র। যারফলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার হলে সাদা খাতা জমা দিয়েই বাড়ি ফিরলেন ওই ১৬ জন পরীক্ষার্থী।   

সূত্রের খবর, সাঁওতালী মাধ্যামের ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন এল বাংলা ও ইংরাজীতে৷ যারফলে পরীক্ষা না দিয়ে খাতা জমা দিয়ে বিডিও অফিসে গিয়ে ধর্নাতে বসেন পরীক্ষার্থীরা৷ ঘটনাস্থলে হাজির হন আদিবাসী নেতারাও৷ বিক্ষোভ শুরু হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসেন অতিরিক্ত জেলা শাসক৷ মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতনের মনোহরপুর রাজা রামচন্দ্র বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্রে। মঙ্গলবার উচ্চমাধ্যমিকের পরিবেশবিদ্যার পরীক্ষা ছিল৷ আর সেই পরীক্ষায় নেকুড়শেণি হাই স্কুলের সাঁওতালি মাধ্যমের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছিল মনোহরপুর রাজা রামচন্দ্র বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলে। 

এদিন ১৬ জন সাঁওতালি মাধ্যমের পরীক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে বসেন তখন দেখা যায়- তাদের যে প্রশ্নপত্র রয়েছে তা নির্দিষ্ট সাঁওতালি মাধ্যমে নেই৷ তার বদলে ইংরেজি বাংলা মাধ্যমে প্রশ্ন রয়েছে। ইতিপূর্বে তারা সাঁওতালি ভাষায় পরীক্ষা দিয়ে এসেছে। যারফলে তাদের পক্ষে পরীক্ষা দেওয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাই ওই সাঁওতালি মাধ্যমের পরীক্ষার্থীরা একেবারেই নিরুপায় হয়ে সাদা খাতা জমা দিতে বাধ্য হয়। এরপর ওই সাঁওতালি মাধ্যমের ১৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে সাদাখাতা জমা দিয়ে নারায়ণগড় বিডিও অফিসে হাজির হন৷ প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে ধর্না, বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা। শুধু তাই নয়, সেখানে হাজির হন আদিবাসী নেতারাও৷ 

আদিবাসীদের বিক্ষোভ হচ্ছে জানতে পেরে খবরে পেয়ে সেখানে হাজির হন অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা হোন্নাইয়া৷ কথা বলেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে৷ এরপর সেখানে হাজির হন জেলা শাসক খুরশেদ আলি কাদেরি৷ জেলা শাসক ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সকলের সঙ্গে কথা বলে বৈঠক করেন বিডিও অফিসেই৷ পরে ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার ওপরেই বেস করে ব্যবস্থা নেওয়ার ইতিবাচক প্রতিশ্রুতী দেন জেলা শাসক৷ ক্ষোভের প্রশমন হয় ছাত্রছাত্রীদের৷ শিক্ষক জিতেন মুর্মু বলেন, ''জেলাশাসক পরবর্তী কালে এমন হবে না বলেই জানিয়েছেন৷ সেই সঙ্গে কী ভাবে এটা  হয়েছে তারও খোঁজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন৷  পরীক্ষা না দিতে পারা ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিকালের উপর বেস করে নম্বর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কথা হয়েছে পর্ষদের সঙ্গেও৷'' জেলা শাসক বলেন, ''বিষয়টি কেন এমন হয়েছে তার খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে ৷ বৈঠক করে ব্যবস্থা নিচ্ছি৷''