ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে এবার অ্যান্ড্রয়েড (Android Earthquake Alert) মোবাইল ফোনই হয়ে উঠছে আপনার জীবনরক্ষক। অদূর ভবিষ্যতে নয়, ইতিমধ্যেই একটি নতুন প্রযুক্তি পৃথিবীর নানা প্রান্তে বসবাসকারী কোটি কোটি মানুষকে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে। আর এই কাজটি সম্ভব হচ্ছে শুধুমাত্র স্মার্টফোনের সাহায্যে, যা এক সময় কল্পনার মতো মনে হলেও, এখন বাস্তব।
আগে থেকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে (Android Earthquake Alert)
২০২০ সালে গুগল প্রথমবারের মতো চালু (Android Earthquake Alert) করে Android Earthquake Alerts System (AEA) নামের একটি বিশেষ সিস্টেম। মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের আগে থেকে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে এই সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছিল। আর এই প্রযুক্তি এতটাই কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে যে, এটি এখন বিশ্বের ৯৮টি দেশে চালু রয়েছে এবং প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মানুষ এর আওতায় এসেছেন।
সিসমিক স্টেশনের উপর নির্ভর করে না (Android Earthquake Alert)
এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল-এটি কোনো ব্যয়বহুল সিসমিক স্টেশনের (Android Earthquake Alert) উপর নির্ভর করে না। বরং, লক্ষ লক্ষ স্মার্টফোনই হয়ে উঠেছে ক্ষুদ্র সিসমিক ইউনিট, যেগুলিতে থাকা অ্যাক্সিলোমিটার সেন্সর ভূকম্পনের সংকেত গ্রহণ করে এবং সেই তথ্য গুগলের সার্ভারে পাঠায়। যদি কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় একাধিক ফোন একই ধরনের কম্পন অনুভব করে, তাহলে গুগল সেটিকে সম্ভাব্য ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করে এবং কাছাকাছি সমস্ত ব্যবহারকারীর মোবাইলে সতর্কবার্তা পাঠায়।
নিরাপদ আশ্রয়
সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩১২টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যেগুলোর মাত্রা ১.৯ থেকে ৭.৮ এর মধ্যে। গবেষণায় উঠে এসেছে, এই সতর্কতার ফলে প্রায় ৮৫% মানুষ কম্পন অনুভবের আগে বা সময়মতো সতর্ক হন। অনেকেই বলেন, কয়েক সেকেন্ড আগে পাওয়া এই সতর্কতা তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় দিয়েছে।
ছোট অ্যালার্ট সেন্টারের মতো কাজ
তুরস্কে একটি ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় এই প্রযুক্তির লাইভ ডেমো প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখানো হয় কীভাবে মোবাইল ফোনে আগাম কম্পন ধরা পড়ছে এবং মানুষ সতর্ক হচ্ছে। গুগল জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প সতর্কতা নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে এই অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম যেখানে প্রতিটি মোবাইল একটি ছোট অ্যালার্ট সেন্টারের মতো কাজ করে।
আরও পড়ুন: UAE: জন্মদিনে আমিরশাহির ফ্ল্যাটে কেরলের বধূর নিথর দেহ! পণের জন্য পৈশাচিক নির্যাতন স্বামীর
এই উদ্ভাবন নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির এক যুগান্তকারী প্রয়োগ। উন্নত দেশ থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশেও, যেখানে ব্যয়বহুল সিসমিক সিস্টেম স্থাপন সম্ভব নয়, সেখানে এই পদ্ধতি হয়ে উঠতে পারে প্রাণরক্ষার এক বিকল্প পথ। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থাকলেই এখন আপনি কিছুটা হলেও নিরাপদ।